পাতা:বিপ্লবী কানাইলাল - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করে কিছু দেখা হয় নি। তবে, ক-বাবু ডাকাতি করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন বটে কিন্তু কোথায় করতে হবে তা কি বলে দেন নি। কাজেই তাই নিয়েই কিছু যা আলোচনা পরামর্শাদি হয়েছিল। পাটের মহাজন, রেলওয়ে ষ্টেশন, পোষ্ট অফিস, স্থানীয় বড়লোক ইত্যাদি অনেক নাম উঠেছিল কিন্তু কোনটাই শেষ পর্যন্ত সুবিধাজনক মনে হয় নি। হেমচন্দ্র লিখছেন—‘কোথাও কিন্তু বড় সুবিধা হল না, অর্থাৎ নিরাপদ বা অহিংস ডাকাতির সম্ভাবনা খুঁজে কোথাও পাওয়া গেল না। অবশেষে একজন সন্ধান দিলেন, রংপুর সহর থেকে ১২৷১৩ মাইল দূরে, তাঁর বাড়ীর নিকট গাঁয়ে এক বিধবার নাকি হাজার খানেক নগদ টাকা আছে। তার বাড়ীর আশে পাশে এমন পুরুষমানুষ না কি কেউ ছিল না যে, ডাকাতদের একটুও বাধা দিতে অর্থাৎ হিংসা করতে পারে। তখন সর্বসম্মতিক্রমে সেই বিধবার বাড়ীতেই স্বদেশী ডাকাতির বউনী করা স্থির হল।’ হেমচন্দ্র এই ডাকাতির নাম দিয়েছিলেন ‘বিধবার ঘটি চুরি।’

 কথা ছিল নরেন গোঁসাই একদল নিয়ে যাবে আর হেমচন্দ্র একদল নিয়ে যাবেন। সঙ্গে থাকবে একজন স্থানীয় পাকা ডাকাত—কলাকৌশল শেখাবার জন্য। আয়োজন সবই সম্পূর্ণ কিন্তু যেদিন রাত্তিরে কাণ্ডটা হবে সেদিন বাড়ী থেকে বেরোবার পর ওরা জানতে পারলে যে স্থানীয় দারোগা কি একটা কাজে নাকি সে-রাত্তিরে সেই গ্রামে যাচ্ছেন। কাজেই এত আয়োজন, শলা-পরামর্শ সমস্তই পণ্ডশ্রম হয়ে গেল।

৪২