পাতা:বিপ্লবী কানাইলাল - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সূত্রপাত হইল তখন সেখানে চার পাঁচ-জনের অধিক ছেলে ছিল না। হাতে একটিও পয়সা নাই, ছেলেরা সকলেই বাড়ী ঘর ছাড়িয়া আসিয়াছে, সুতরাং তাহাদের মা বাপদের কাছ থেকেও কিছু পাইবার সম্ভাবনা নাই। অথচ ছেলেদের আর কিছু জুটুক আর নাই জুটুক, দুবেলা দুমুঠো ভাত ত’চাই! দু’একজন বন্ধু মাসিক কিছু কিছু সাহায্য করিতে প্রতিশ্রুত হইলেন, আর স্থির হইল যে, বাগানের শাকসব্জীর ক্ষেত করিয়া বাকী খরচটা উঠাইয়া লওয়া হইবে। বাগানে আম জাম কাঁঠালের গাছও যথেষ্ট ছিল। সেগুল। জমা দিয়াও কোন্ না দু-দশ টাকা পাওয়া যাইবে? আর আমাদের খাইতেও বেশি খরচ নয়— ভাতের উপর ডাল আর একটা তরকারী। অধিকাংশ দিনই আবার ডালের মধ্যে দুই চারিটা আলু ফেলিয়া দিয়া তরকারীর অভাব পুরাইয়া লওয়া হইত। সময়াভাব হইলে খিচুড়ির ব্যবস্থা। একটা মস্ত সুবিধা হইল এই যে, বারীণ তখন ঘোরতর ব্রহ্মচারী। মাছের আঁশ বা পেঁয়াজের খোসাটী পর্যন্ত বাগানে ঢুকিবার হুকুম নাই; তেল লঙ্কা একেবারেই নিষিদ্ধ। সুতরাং খরচ কতকটা কমিয়া গেল।

 ‘উপার্জনের আরও একটা পথ বারীন্দ্র আবিষ্কার করিয়া ফেলিল—হাঁস ও মুরগী রাখা!...আমাদের বাজে খরচের মধ্যে ছিল চা। ওটা না থাকিলে সংসার নিতান্তই ফিকে ফিকে, অনিত্য বলিয়া মনে হইত। বিশেষতঃ বারীন চা বানাইতে সিদ্ধহস্ত। তাহার হাতের গোলাপী চা, ভাঙ্গা

৪৬