পাতা:বিপ্লবী কানাইলাল - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 সাহেবের কথা ওঁরা মুগ্ধচিত্তে শুনছিলেন! এমন সময় পুলিস কমিশনার হ্যালিডে ও কয়েকজন পার্ষদ এসে তাঁদের তাড়া দিয়ে বাইরে যেতে বললেন। আবরণ মুক্ত করে ফেলা হল। দেখা গেল দিব্যজ্যোতিতে উদ্ভাসিত কানাইলালের মৃতদেহ—মৃত্যুর করাল স্পর্শের এতটুকু ছায়া নেই সেখানে।

 হ্যালিডে সাহেব বললেন, মৃতদেহ কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। তাই করা হল! জেল প্রহরী পায়খানায় যাবার সরু নোংরা রাস্তা দিয়ে তাঁদের বাইরে নিয়ে এল। জেলগেট পেরিয়ে আসতেই সমবেত জনতার মধ্য থেকে বন্দেমাতরম্ ধ্বনি আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে দিল। তারপর শবদেহ বাত্যাবিক্ষুব্ধ তরণীর মত জনসমুদ্রে যেন ভেসে চলল। লক্ষ লক্ষ ফুলের মালা আর গীতা বর্ষিত হতে লাগল। ফুল, চন্দন, বেলপাতাও বাদ গেল না। সে এক অভিনব দৃশ্য। শোনা যায় নরেন গোঁসাইর মৃত্যুর খবর যেদিন প্রকাশিত হয়েছিল সেদিন লোকে পথে পথে (কেউ কেউ আবার উলঙ্গ হয়ে!) নৃত্য করেছিল, সুরেন্দ্রনাথ তাঁর পত্রিকা ‘Bengalie’ অফিসে বসে সন্দেশ বিতরণ করেছিলেন আজ আবার এক নূতন উন্মত্ততায় দেশ ভরে গেল। কানাইলাল আর সত্যেন্দ্রর মূর্তি গড়ে ছেলেরা পূজো পর্যন্ত করেছিল।

 দাহ কার্য শেষ হতে বিকেল পড়ে এল। চন্দন কাঠে আর ঘিয়ে শ্মশান ভরে গেছে। কলসী কলসী জল ঢেলে

৯০