পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮২
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

পরিচালনা করিয়া লইয়া যান। শোভাযাত্রা ময়দানের সমীপবর্ত্তী হইলে পুলিশ বেপরোয়া লাঠি চালনা করে। উহার ফলে সুভাষচন্দ্র আহত হন। আইন ভঙ্গের অপরাধে তিনি ছয়মাস সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।

 কিন্তু দণ্ডকাল শেষ হইবার পূর্ব্বেই তিনি মুক্তি লাভ করেন; কেননা, সেই সময় গান্ধীজী আইন অমান্য আন্দোলন প্রত্যাহার করিয়াছেন এবং গান্ধী-আরউইন চুক্তি স্বাক্ষরিত হইয়াছে। এই চুক্তিতে দারুণ অসন্তুষ্ট হইলেও সুভাষচন্দ্র তখনকার পরিস্থিতি বিবেচনায় কংগ্রেসের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখিবার আবেদন জানাইয়া এক বিবৃতি প্রচার করেন। ইতিপূর্ব্বে প্রথম গোলটেবিল বৈঠকে কংগ্রেস যোগদান না করায় বৈঠক চরম ব্যর্থতায় পর্য্যবসিত হয়। গান্ধী-আরউইন চুক্তির পর কংগ্রেস দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকে যোগদানের প্রস্তাবে স্বীকৃত হয়। কিন্তু দেশের যুবশক্তি এই চুক্তি ও আপোষ মানিয়া লয় নাই। সেই সময়ে ভগৎ সিং, রাজগুরু ও শুকদেও ব্যবস্থাপরিষদে বোমানিক্ষেপের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হইয়াছিলেন। এই বীর যুবকত্রয়ের মৃত্যুদণ্ডাজ্ঞারদকল্পে দেশব্যাপী তুমুল আন্দোলনের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করিয়া যুবসম্প্রদায় এই দাবী উত্থাপন করে যে, এই বীরত্রয়ের মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাহার না হইলে গভর্ণমেণ্টের সহিত কোন প্রকার চুক্তিই হইতে পারে না। জনমতের চাপে গান্ধীজী বড়লাটকে বলিয়াও এ বিষয়ে কিছুই করিতে পারিলেন না। অথচ, এই যুবকদের ফাঁসিরদ না করাতে তিনি আপোষ-আলোচনা ভাঙ্গিয়াও দিলেন না। ২৩শে মার্চ্চ যে সময়ে কংগ্রেসের অধিবেশন আরম্ভ হয় ঠিক সেই সময়ে ভারতের নবজাগ্রত যুবশক্তি ও দেশাত্মবোধের মূর্ত্ত প্রতীক, আত্মত্যাগের জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত ভারতমাতার এই বীর সন্তানত্রয় সাম্রাজ্যবাদের যুপকাষ্ঠে আত্মাহুতি দিলেন। এই ঘটনায় দেশের যুবসম্প্রদায় ক্ষিপ্ত হইয়া উঠে এবং সর্ব্বত্র কৃষ্ণপতাকাধারী ছাত্র শোভাযাত্রিদল কংগ্রেস নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে। এই মর্মন্তুদ ঘটনার বর্ণনা করিতে গিয়া জওহরলাল