পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

 মিঃ বিটলভাই প্যাটেলের মৃত্যু হইলে সুভাষচন্দ্র তাঁহার শব ভারতে প্রেরণের ব্যবস্থা করিয়াছিলেন এবং শবাধারের সহিত তিনি মার্সাই বন্দর পর্য্যন্ত আসিয়াছিলেন।

 এই সময়ে গান্ধীজী তাঁহার দ্বিতীয় আইন অমান্য আন্দোলন প্রত্যাহার করেন। এই আইন অমান্য আন্দোলন প্রত্যাহার উপলক্ষে ১৯৩৩ সনের মে মাসে সুভাষচন্দ্র ও বিটলভাই ভিয়েনা হইতে এক যুক্ত বিবৃতি দান করেন। তাহাতে তাঁহারা ঘোষণা করেন যে, গান্ধীজী কর্ত্তৃক আন্দোলন প্রত্যাহার পরাজয় স্বীকার করা ভিন্ন অন্য কিছুই নয়। “আমাদের স্পষ্ট অভিমত এই যে গান্দীজী রাজনৈতিক নেতা হিসাবে ব্যর্থ হইয়াছেন। অতএব এখন নূতন উপায়ে ও নূতন মতবাদের ভিত্তিতে কংগ্রেসের আমূল সংস্কার সাধন করিবার সময় উপস্থিত হইয়াছে এবং ইহার জন্য একজন নূতন নেতারও অত্যন্ত প্রয়োজন। কেননা গান্ধীজী তাঁহার সমস্ত জীবনের বিশ্বাস, আদর্শ ও কর্ম্মপন্থার বিরুদ্ধে যাইবেন তাঁহার নিকট ইহা আশা করা অনুচিত। *** যদি সমগ্র কংগ্রেসকে এই ভাবে পুনর্গঠিত করা যায় তবেই সর্বোত্তম হইবে। নতুবা কংগ্রেসের অভ্যন্তরেই সমস্ত আমূলপরিবর্ত্তনপন্থী (radcial) উপাদানের সম্মেলনে এক নৃতন দল গঠন হইবে।” পরে যখন তাঁহাকে লণ্ডন প্রবাসী ভারতীয়দের এক সর্ব্বদলীয় সম্মেলনে সভাপতিত্ব করিতে আমন্ত্রণ করা হয় তখন তিনি এক লিখিত বাণী প্রেরণ করিয়া বলেন, “১৯৩১ সালের দিল্লী চুক্তি যদি ভ্রান্ত হইয়া থাকে তবে ১৯৩৩ সালের আত্মসমর্পণ এক বিরাট জাতীয় দুর্গতি। এই সঙ্কটময় মুহূর্ত্তে আইন অমান্য আন্দোলন বন্ধ করিয়া দেওয়ায় গত ১৩ বৎসরের জাতির সমস্ত ত্যাগস্বীকার ও দুঃখবরণ কার্য্যতঃ নিষ্ফল হইল।” বলা বাহুল্য, উক্ত সম্মেলনে যোগদানের জন্য সুভাষচন্দ্রকে ইংলণ্ডে যাইবার অনুমতি দেওয়া হয় নাই। সমুদ্র শুল্ক আইন অনুসারে ঐ অভিভাষণ ভারতে প্রেরণ নিষিদ্ধ হয়। এই সম্মেলনেই সুভাষচন্দ্র