পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
৯৩

তাঁহাকে ভারতে থাকিবার অনুমতি দেওয়া হয়। ১৯৬৫ সালের জানুয়ারী মাসে সুভাষচন্দ্র পুনরায় ইউরোপ যাত্রা করেন।

 বলিতে গেলে ১৯৩৩ হইতে ১৯৩৬ সাল পর্য্যন্ত সুভাষচন্দ্র একাদিক্রমে ইউরোপে প্রবাস যাপন করেন। এই সময় তিনি কেবলমাত্র নিজের স্বাস্থ্যোদ্ধারেই ব্যস্ত ছিলেন না। প্রবাসে তিনি কংগ্রেসের দূত হিসাবে বহির্জগতে ভারতবর্ষ ও ভারতবাসীর পক্ষ হইয়া প্রচারকার্য্য চালান। সুভাষচন্দ্রের পূর্ব্বে কেহ রাজনীতিক্ষেত্রে বহির্জাগতিক প্রচারের উপর তেমন গুরুত্ব দেন নাই অথচ ইহার প্রয়োজনীয়তা যে কতখানি তাহা যতই দিন যাইতেছে ততই আমরা বেশী করিয়া উপলব্ধি করিতেছি। ব্রিটীশ সাম্রাজ্যবাদ ভারতীয় সংস্কৃতি ও শিল্পকে একদিকে ব্যঙ্গ করিয়া ও অপরদিকে বৃটিশ শাসনাধীনে ব্রিটিশশাসিত ভারতের সর্ব্বাঙ্গীন উন্নতির জয়ডঙ্গা বাজাইয়া ভারতের জাতীয় আন্দোলনকে বিদেশীর চোখে হেয় প্রতিপন্ন করিবার চেষ্টা করিতেছে। প্রবাস জীবনে সুভাষচন্দ্র সর্ব্বপ্রথম সাম্রাজ্যবাদের এই কুৎসা প্রচারের বিরুদ্ধে অভিযান আরম্ভ করেন। এই কার্য্যে তাঁহার প্রধান সহায় ছিলেন প্রবীণ দেশকর্ম্মী বিটলভাই পাটেল। মৃত্যুকালে বিটলভাই বৈদেশিক প্রচারকার্য্য চালাইবার জন্য সুভাষচন্দ্রের নাম ১লক্ষ টাকা লিখিয়া দেন। পরে অবশ্য আইনগত ত্রুটির সূত্র ধরিয়া তাঁহাকে ঐ অর্থ হইতে বঞ্চিত করা হয়। বিদেশে সাম্রাজ্যবাদী অপপ্রচার, কুৎসামূলক ছবি ও ছায়াচিত্রের সাহায্যে ইহাই প্রচার করা হয় যে, ভারতীয়গণ অতিশয় অসভ্য ও বর্ব্বর। এই অসভ্য ভারতীয়গণের উন্নতির জন্য শ্বেতাঙ্গগণ আপ্রাণ চেষ্টা করিতেছে। ভারতবর্ষকে সভ্য করিবার মহান কর্ত্তব্যবোধে ঈশ্বরপ্রেরিত এই শ্বেতাঙ্গগণ নিঃস্বার্থভাবে ভারতশাসনের দায়িত্ব নিজেদের ঘাড়ে লইয়াছে। সুভাষচন্দ্র এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করিতে আরম্ভ করেন। সুভাষচন্দ্র একটি প্রবন্ধে ইউরোপে সাম্রাজ্যবাদী