পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

মহাযুদ্ধের পরবর্ত্তী ইউরোপের প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করিলে দেখা যায় যে, যে সকল দেশে শক্তিশালী দল পুনর্গঠনকার্য্যে আত্মনিয়োগ করিয়াছে, সেই সকল দেশে জাতীয় অগ্রগতি অব্যাহত রহিয়াছে।

 কংগ্রেস ও সমাজিক পুনর্গঠন—ভবিষ্যৎ সমাজ-গঠন ব্যবস্থার বিস্তৃত বিবরণ প্রদান বর্ত্তমানে সম্ভব না হইলেও, আমার বিশ্বাস এই যে, কেবলমাত্র সমাজতান্ত্রিক পদ্ধতির দ্বারাই দারিদ্রমোচন, নিরক্ষরতা ও ব্যাধি দূরীকরণ এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে উৎপাদন ও সরবরাহের ব্যবস্থা সম্পর্কিত আমাদের প্রধান জাতীয় সমস্যাসমূহের সমাধান হইতে পারে। এই পুনর্গঠন কার্য্যে আমাদের ভবিষ্যৎ জাতীয় সরকারকে সর্ব্বাগ্রে একটি কমিশন নিয়োগ করিতে হইবে। এই কমিশন জাতিগঠনের ব্যাপক কর্ম্মপন্থা নির্দ্ধারণ করিবেন। কমিশন কর্ত্তৃক নির্দ্ধারিত কর্ম্মপন্থার দুইটি অংশ থাকিবে। প্রথম অংশে অবিলম্বে কার্য্যে পরিণত করিবার উপযোগী একটি কর্ম্মপন্থা এবং দ্বিতীয় অংশে, কিছুকাল যাবৎ অনুসরণের যোগ্য অপর একটি কর্ম্মপন্থা থাকিবে। প্রথম অংশ রচনার সময় নিম্নোক্ত তিনটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখিতে হইবে:—

 (১) আত্মত্যাগের জন্য দেশকে প্রস্তুত করা,

 (২) দেশকে ঐক্যবদ্ধ করা,

 (৩) ব্যক্তিগত ও সংস্কৃতিগত স্বাধীনতা।

 যে বৈদেশিক শাসনের ফলে আমরা আজ পরস্পর বিচ্ছিন্ন ও হেয় অবস্থায় পতিত, আমাদের স্কন্ধ হইতে সেই গুরুভার অপসারণের পর সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখিবার নিমিত্ত বিশেষ সচেষ্ট হইতে হইবে। জাতীয় ঐক্যবৃদ্ধির নিমিত্ত একটি সাধারণ বর্ণমালা ও রাষ্ট্রীয় ভাষার প্রবর্ত্তন প্রয়োজন। অতঃপর বিমান, টেলিফোন, বেতার, চলচ্চিত্র, টেলিভিসন প্রভৃতি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির সাহায্যে ভারতের বিচ্ছিন্ন