পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১১৫

 পররাষ্ট্রনীতি ও বিদেশে প্রচার কার্য্য—গত কয়েক বৎসর যাবৎ একটি সমস্যা সম্পর্কে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশেষ আগ্রহান্বিত। ভারতের পররাষ্ট্রনীতি ও আন্তর্জ্জাতিক সংযােগ স্থাপনের বিষয় উপস্থিত করাই আমার উদ্দেশ্য। আমার মনে হয় যে আগামী কয়েক বৎসরের মধ্যে আন্তর্জ্জাতিক পরিস্থিতির এরূপ পরিবর্ত্তন ঘটিবে যে তাহা ভারতের মুক্তিসংগ্রামের অনুকুল বলিয়া বিবেচিত হইবে। সেই জন্য বিশ্বপরিস্থিতির প্রত্যেকটি পরিবর্ত্তন সম্পর্কে সচেতন থাকিতে হইবে এবং কিরূপে তাহার সুযােগ গ্রহণ করা যায় তাহা বিবেচনা করিতে হইবে। আমাদের সম্মুখে মিশরের দৃষ্টান্ত রহিয়াছে। কোন প্রকার হিংসাত্মক নীতি গ্রহণ না করিয়া মিশর কিরূপে স্বাধীনতার সন্ধি-চুক্তি আদায় করিতে সমর্থ হইয়াছিল? তাহারা ভূমধ্যসাগরে ইঙ্গ-ইতালীয় বিরােধের সুযােগ গ্রহণ করিতে পারিয়াছিলেন বলিয়া তাহা সম্ভব হইয়াছিল।

 আমাদের পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে আমার প্রথম বক্তব্য এই যে কোন দেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতি বা উহার রাষ্ট্রীয় গঠন আমাদিগকে যেন প্রভাবান্বিত না করে। প্রত্যেক দেশেই ভারতের মুক্তি-আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন নরনারী থাকিবেই। প্রত্যেক দেশেই ভারতের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন নরনারীর দল গঠন করিতে হইবে। বিদেশে যে সকল ভারতীয় ছাত্র আছে, তাহারাও আমাদের এই প্রচেষ্টায় সহায়তা করিতে পারে। ভারতীয় ছাত্রদের অভাব-অভিযােগের প্রতি আমরা দৃষ্টি রাখিতে পারিলে, তাহারাও এই বিষয়ে আমাদিগকে সাহায্য করিবে। বিদেশের ভারতীয় ছাত্রগণের সহিত ভারতের জাতীয় মহাসভার ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র রাখিতে হইবে। আমাদের শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কিত ছায়াচিত্র যদি আমরা বিদেশে পাঠাইতে পারি, তবে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের জনধারণ আমাদের বিষয় অবগত হইবে এবং আমরা তাঁহাদের সহানুভূতি লাভ করিতে সমর্থ হইব। আমাদের এই প্রচেষ্টাকে সার্থক করিয়া তুলিতে