জাতীয় মহাসভার পতাকাতলে সমগ্র জাতিকে সমবেত করুন। কংগ্রেসকে শক্তিশালী ও সঙ্ঘবদ্ধ করুন—বামপন্থীদের প্রতি ইহাই আমার আবেদন। ব্রিটীশ সাম্যবাদীদলের নেতৃবৃন্দের মনোভাবে বিশেষ ভাবে উৎসাহিত হইয়া আমি এই আবেদন করিলাম। ভারতবর্ষ সম্পর্কে ব্রিটীশ সাম্যবাদীদলের সাধারণনীতি কংগ্রেসের নীতির প্রায় অনুরূপ।
উপসংহারে আপনাদের মনোভাবের প্রত্যভিব্যক্তিস্বরূপ আমি ব্যাকুলভাবে প্রার্থনা করিতেছি যে, জাতির মুক্তির জন্য মহাত্মাজী আরও দীর্ঘকাল জীবিত থাকুন। এই যুগসন্ধিক্ষণে ভারতবর্ষ তাঁহাকে কিছুতেই হারাইতে পারে না। দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ রাখিবার জন্য তাঁহাকে প্রয়োজন, আমাদের সংগ্রামকে হিংসা-দ্বেষ মুক্ত রাখিতে তাঁহাকে প্রয়োজন। ভারতের স্বাধীনতা ও সর্ব্বমানবের কল্যাণের জন্য গান্ধীজীর সাহচর্য্য প্রয়োজন। কেবলমাত্র ব্রিটীশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম নহে— বিশ্ব-সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম। কেবলমাত্র ভারতের স্বাধীনতার জন্য আমরা সংগ্রাম করিতেছি না— সর্ব্বমানবের মুক্তির জন্য আমরা সংগ্রাম করিতেছি। ভারতের স্বাধীনতার সহিত বিশ্বমানবের মুক্তিসমস্যা বিজড়িত।”
সতের
সুভাষচন্দ্রের ‘সাম্যবাদ সংঘ’ পরিকল্পনায় ও ইটালী পরিভ্রমণের সময় রোমে তাঁহার অভ্যর্থনার সমারোহ দেখিয়া ও তাঁহার মুখে ইটালীর পুনরভ্যুত্থান ও সেখানকার যুবশক্তির অজস্র প্রশংসাবাদ শুনিয়া যাহারা সুভাষচন্দ্রের চিন্তাধারা ও কার্য্যক্রমের মধ্যে ‘ফ্যাসিবাদ’ আবিষ্কার করিয়া শঙ্কিত হইয়াছিলেন হরিপুরা কংগ্রেসে রাষ্ট্রপতির অভিভাষণ পড়িয়া তাঁহাদের সে আশঙ্কা দূরীভূত হইবে।