পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৩৩

একটি জাতীয় ভবন নির্মানের প্রস্তাব আলোচিত হয়। চিত্তরঞ্জন এভিনিউর উপর প্রশস্ত একখণ্ড জমি বার্ষিক এক টাকা খাজনায় ৯৯ বৎসরের জন্য সুভাষচন্দ্র বসুকে দিবার প্রস্তাব ঐ সভায় গৃহীত হয়। এই জমির উপরে সুভাষচন্দ্র বৃহৎ অট্টালিকা নির্মাণ করিয়া তন্মধ্যে রঙ্গালয়, বক্তৃতামঞ্চ, গ্রন্থাগার ও একটি ব্যায়ামগার প্রতিষ্ঠা করিবেন। প্রাদেশিক কংগ্রেসের কার্য্যালয়ও ঐ ভবনেই স্থাপিত হইবে। সুভাষচন্দ্রের সমর্থকগণ কর্পোরেশনের সভায় প্রস্তাব করিলেন, জাতীয় ভবন নির্মাণের জন্য সুভাষচন্দ্রকে নগদ এক লক্ষ টাকা দেওয়া হউক। কর্পোরেশনে তখন সুভাষচন্দ্রের অসামান্য প্রভাব। বিরোধিতা সত্ত্বেও এই প্রস্তাব পাস্ হইয়া গেল। কিন্তু শেষ পর্য্যন্ত ঐ টাকা বাহির হইল না। কর্পোরেশনের কৃষ্ণকায় পরিচালকগণ শ্বেতাঙ্গ প্রভুদের চোখ রাঙানিতে সন্ত্রস্ত হইয়া অচিরাৎ তাহাদের মত পরিবর্তন করিলেন। কেহ ধুয়া তুলিল যে ঐ লক্ষ টাকার দ্বারা জাতীয় ভবনও প্রতিষ্ঠা হইবে না, জাতীয় বাহিনী ও গঠিত হইবে না—“টাকাগুলি গান্ধীমারণ যজ্ঞে ঘৃতাহুতি দিতেই শেষ হইয়া যাইবে”। সেবার কলিকাতার ওয়েলিংটন স্কোয়ারে নিখিল ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতির অধিবেশনে সুভাষচন্দ্র কংগ্রেসের সভাপতি পদ পরিত্যাগ করিয়াছেন। সুভাষচন্দ্রের রাষ্ট্রপতিপদ ত্যাগের পর হইতে গান্ধীজী ও কংগ্রেসের উচ্চমণ্ডলের বিরুদ্ধে প্রবল বিক্ষোভের প্রচণ্ড ঘূণিবাত্যা সমগ্র বাঙ্‌লাদেশকে বিপর্য্যস্ত করিয়া তুলিয়াছিল; কাজেই উক্ত মতবাদের একদল সমর্থকও জুটিল। ইতিমধ্যে হাইকোর্ট ইন্‌জাঙ্‌সন জারি করিয়া বসিল। এদিকে কিন্তু সমস্ত আয়োজনই প্রায় সম্পূর্ণ হইয়া গিয়াছে।

 ১৩৪৬ সালের ২রা ভাদ্র কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ এই জাতীয় ভবনের ভিত্তি স্থাপন করিলেন। ভিত্তি-স্থাপন উপলক্ষে প্রদত্ত অভিভাষণে তিনি বলেন—“আজ এই মহাজাতি সদনে আমরা বাঙ্‌লাজাতির যে শক্তির