পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৩৯

সর্দার প্যাটেলের পরবর্ত্তী বিবৃতিতে ইহাও প্রকাশ যে, মহাত্মা গান্ধীও ঐ ঘরোয়া আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন। আশ্চর্য্যের বিষয় কংগ্রেসের সভাপতি হইয়াও সুভাষচন্দ্র এবং ওয়ার্কিং কমিটির অন্যান্য সদস্যগণের কেহই (ওয়ার্কিং কমিটির) ঐ আলোচনা ও সিদ্ধান্তের কথা কিছুই জানিতেন না! সে যাহাই হউক, সুভাষচন্দ্র কংগ্রেসের আভ্যন্তরিক ঐক্য বজায় রাখিতেই চাহিয়াছিলেন। তিনি যে নির্ব্বাচন হইতে সরিয়া দাঁড়ান নাই তাহার কারণ তিনি মনে করেন যে, এবারকার সভাপতি নির্বাচন কোন ব্যক্তিগত ব্যাপার নহে—এই নির্ব্বাচনের দ্বারা কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থাই নির্দ্ধারিত হইবে। সর্দার প্যাটেল প্রমুখ নেতৃবৃন্দের বিবৃতির উত্তরে সুভাষচন্দ্র এক বিবৃতি প্রসঙ্গে তাঁহার সুচিন্তিত মত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “অনেকেই মনে করেন যে আগামী বৎসর যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে কংগ্রেসের দক্ষিণপন্থীদের সহিত বৃটিশ গভর্ণমেণ্টের আপোষ নিষ্পত্তির সম্ভাবনা আছে। কাজেই দক্ষিণপন্থীরা একজন বামপন্থী কংগ্রেস-সভাপতি নির্ব্বাচিত হওয়া পছন্দ করেন না— কেননা, তিনি এই আপোষ রফার অন্তরায় হইতে পারেন এবং আলোচনার পথে বিঘ্ন উৎপাদন করিতে পারেন। জনসাধারণের সহিত ঘনিষ্ঠভাবে মিশিলে এবং তাহাদের সহিত আলোচনা করিলেই বুঝা যায় যে, এই বিশ্বাস অত্যন্ত গভীর ও ব্যাপক। সুতরাং বর্ত্তমান অবস্থায় মনে-প্রাণে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী একজন কংগ্রেস সভাপতির প্রয়োজন। সভাপতিপদের জন্য আমার নাম প্রস্তাবিত হওয়ায় আমি সত্যই দুঃখিত হইয়াছি। এই জন্যই আমি বহুসংখ্যক বন্ধুকে বলিয়াছিলাম যে, আমার পরিবর্ত্তে বামপন্থীদের মধ্য হইতে একজন নূতন প্রার্থী দাঁড় করান উচিত। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে সেরূপ না করিয়া কয়েকটি প্রদেশ হইতে আমারই নাম প্রস্তাবিত হইয়াছে। এখনও যদি আচার্য্য নরেন্দ্র দেবের ন্যায় একজন প্রকৃত যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বামপন্থীকে আগামী বৎসরের সভাপতিপদে নির্ব্বাচিত করা হয়, তবে আমি নির্ব্বাচন-