পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৫১

কোন মুহূর্ত্তেই প্রলয়ঝঞ্ঝা সুরু হইতে পারে। ভারতবর্ষেও যে তাহার প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে না তাহা কে বলিতে পারে? এইরূপ অবস্থায় সুভাষচন্দ্র বলিষ্ঠ মনোভাবের পরিচয় দিতে দ্বিধা করিলেন না। তিনি পদত্যাগেচ্ছু সভ্যদের পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করাই সমীচীন মনে করিলেন।

 উল্লিখিত বারজন সদস্যের পদত্যাগপত্র গ্রহণের কথা সুভাষচন্দ্র ২৬শে ফেব্রুয়ারী এক পত্রযোগে সদস্যবর্গকে জানাইয়া দেন। ঐ পত্রে তিনি লিখেন, “আপনারা সম্মিলিত ভাবে ২২শে ফেব্রুয়ারী ওয়ার্দ্ধা হইতে যে পদত্যাগ পত্র প্রেরণ করিয়াছেন তাহা যথাসময়ে আমার নিকট পৌঁছিয়াছে। আমার অসুস্থতার জন্য এতদিন পর্য্যন্ত উহার উত্তর দিতে পারি নাই। সাধারণ ক্ষেত্রে আমি আপনাদের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে পুনর্ব্বিবেচনা করিতে এবং ত্রিপুরীতে আমাদের সাক্ষাৎ না হওয়া পর্য্যন্ত আপনাদের পদত্যাগ স্থগিত রাখিতে অনুরোধ করিতাম। কিন্তু আমি জানিতে পারিয়াছি যে, আপনারা বিশেষভাবে সমস্ত অবস্থা সম্পর্কে চিন্তা করিয়া সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছেন। আপনাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের যদি বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা থাকিত, তাহা হইলে আমি নিশ্চয়ই আপনাদিগকে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করিতে অনুরোধ করিতাম। বর্ত্তমান অবস্থায় এইরূপ মামুলী অনুরোধে কোন লাভ নাই। কাজেই গভীর দুঃখের সহিত আপনাদের পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করিতেছি।

 আমি মনে করি, আপনাদের পদত্যাগের দ্বারা ইহা বুঝাইবে না যে, আপনারা সহযোগিতা প্রত্যাহার করিতেছেন। আমি একান্তভাবে বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতে আমার কার্য্য সম্পাদনে আমি আপনাদের সাহায্য ও সহযোগিতা লাভে সমর্থ হইব। আপনাদের সাহায্য ও সহযোগিতা যে মূল্যবান তা উল্লেখ করা নিষ্প্রয়োজন। আমি আরও আশা করি, ত্রিপুরী কংগ্রেসে আমাদের মধ্যে মতানৈক্য অপেক্ষা ঐক্য অধিকমাত্রায়