পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তেইশ

 চিকিৎসকগণের পরামর্শ উপেক্ষা করিয়া ৫ই মার্চ্চ রবিবার রাষ্ট্রপতি সুভাষচন্দ্র অসুস্থদেহে বোম্বাই মেলযোগে ত্রিপুরী যাত্রা করিলেন। গাড়ি ছাড়িবার পনের মিনিট পূর্বে সুভাষচন্দ্র একটি এ্যাম্বুলেন্স গাড়িতে হাওড়া ষ্টেশনে উপস্থিত হন। সুভাষচন্দ্রের শরীরের উত্তাপ তখন ৯৯.৪ ডিগ্রী। ইতিপূর্বে ডাঃ স্যার নীলরতন সরকার সুভাষচন্দ্রের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়া তাঁহাকে ত্রিপুরী যাইতে নিষেধ করেন ও স্বাস্থ্যের অবস্থা উদ্বেগজনক বলিয়া মত প্রকাশ করেন। অসুস্থ শরীরেই তিনি ত্রিপুরী অভিমুখে রওনা হইলেন। হাওড়া স্টেশনে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি তাঁহাকে পুষ্পমাল্যভূষিত করেন। সুভাষচন্দ্রের কামরার বহির্দ্দেশে একটি বৃহৎ ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা দুলিতে থাকে। বিপুল বন্দেমাতরম্ ধ্বনির মধ্যে ট্রেণ খানি চলিতে আরম্ভ করে। সুভাষচন্দ্রের বৃদ্ধা জননী শ্রীযুক্তা প্রভাবতী দেবী তাঁহার সংগে ছিলেন।

 ত্রিপুরীতে রাষ্ট্রপতির অভ্যর্থনার বিরাট আয়োজন হইয়াছিল। রাষ্ট্রপতিকে শোভাযাত্রা সহকারে লইয়া যাইবার জন্য ৫২টি হস্তিবাহিত সুদৃশ্য রথের ব্যবস্থা হইয়াছিল। সুভাষচন্দ্র অত্যন্ত দুর্বল ও ক্লান্ত বোধ করায় শোভাযাত্রার সহিত যাইতে পারেন নাই। রাষ্ট্রপতির একখানি বৃহৎ প্রতিকৃতি পুষ্পমাল্য বিভূষিত করিয়া একটি অতিকায় নানাঅলঙ্কার-পরিশোভিত গজপৃষ্ঠে স্থাপন করিয়া শোভাযাত্রা চলিতে আরম্ভ করে। বিষ্ণুদত্ত নগর হইতে ছয় মাইল দূরবর্ত্তী ‘পিসমিস মারিয়া’ হইতে শোভাযাত্রা বহির্গত হয়। স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে এই শোভাযাত্রাকে উপলক্ষ করিয়া যে উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখা গিয়াছিল তাহার তুলনা বিরল। ঝাণ্ডাচৌক পর্য্যন্ত এই অপূর্ব দৃশ্য দেখিবার জন্য