পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

উপবাসের পর মহাত্মা প্রায়োপবেশন ভঙ্গ করেন। ৪ দিন উপবাসের ফলে তিনি অত্যন্ত দুর্ব্বল হইয়া পড়েন। সেজন্য তিনি ত্রিপুরী কংগ্রেসে উপস্থিত থাকিতে পারিলেন না। সুভাষচন্দ্রের অনুরোধের উত্তরে মহাত্মা তাঁহাকে তারে জানাইয়াছেন—“আপনি চিকিৎসকের নির্দ্দেশ অবহেলা করিয়াছেন, কিন্তু আমার সে সাহস নাই।” মহাত্মার চিকিৎসকগণ তাঁহাকে সোমবারের পূর্বে কোথাও রওনা হইতে নিষেধ করিয়াছেন— অর্থাৎ যতদিন না কংগ্রেসের অধিবেশন শেষ হয়! কংগ্রেসের এই গোলযোগর সময় মহাত্মা রাজকোট সমস্যাকে প্রধান করিয়া লইলেন। এদিকে কর্ত্তব্যানুরোধে অসুস্থতাসত্ত্বেও নিজের জীবন বিপন্ন করিয়া সুভাষচন্দ্র ত্রিপুরীতে উপস্থিত হন।

 ১৯৩৯ সালের ত্রিপুরি কংগ্রেসে রাষ্ট্রপতি সুভাষচন্দ্র নিম্নোক্ত অভিভাষণ প্রদান করেন:—

সহকর্মী চেয়ারম্যান, ভ্রাতা ও ভগিনীস্থানীয় প্রতিনিধিবৃন্দ,

 ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত করিয়া আপনারা আমাকে যে মহাসম্মান প্রদান করিয়াছেন ও এখানে আপনারা আমাকে যে আন্তরিক ও সাদর অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করিয়াছেন, তজ্জন্য হৃদয়ের অন্তস্তল হইতে আপনাদিগকে ধন্যবাদ জানাইতেছি। অবশ্য, এই উপলক্ষে সাধারণতঃ অনুষ্ঠিত সমারোহের কতকাংশ আমার অনুরোধে আপনাদিগকে বর্জন করিতে হইয়াছে। বন্ধুগণ, রাজকোটে মহাত্মা গান্ধী যে সাফল্য লাভ করিয়াছেন ও তিনি যে উপবাস ভঙ্গ করিয়াছেন, তজ্জন্য সর্বপ্রথমে আমরা সকলে আনন্দ প্রকাশ করিতেছি। সমগ্র দেশ আজ বিরাট বিপদ হইতে মুক্ত হইয়া অনির্বচনীয় সুখলাভ করিয়াছে।

 বিশেষ বৎসর—বন্ধুগণ, নানা দিক দিয়া এই বৎসর একটি অস্বাভাবিক বা অসাধারণ বৎসর হইবে বলিয়া মনে হইতেছে। এইবার রাষ্ট্রপতি-নির্বাচন প্রচলিত রীতি অনুযায়ী হয় নাই। রাষ্ট্র-পতি নির্বাচনের পরে এমন সব