পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬০
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
right

বিতাড়নের জন্য তথাকথিত গণতান্ত্রিক শক্তিদ্বয় ফ্রান্স ও গ্রেট ব্রিটেন, ইটালি ও জার্মানীর সহিত হাতে হাত মিলাইয়াছে। কিন্তু এইরূপ মিতালি কতদিন বজায় থাকিবে—রাশিয়াকে দমন করিয়া ফ্রান্স ও গ্রেট ব্রিটেনের কী লাভ হইবে? ইয়ােরােপে ও এশিয়ায় বর্ত্তমানে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতির উদ্ভব হইয়াছে, তাহার ফলে শক্তি ও মর্য্যাদার দিক দিয়া ব্রিটিশ ও ফরাসী সাম্রাজ্যবাদের গতি বিশেষ বাধা ও পরাজয়ের সম্মুখীন হইয়াছে, এবিষয়ে সন্দেহ নাই।

 গ্রেট ব্রিটেনের চরমপত্র—আমাদের অবস্থা সম্বন্ধে আমি দুই একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার আলােচনা করিব। প্রথমতঃ, কিছুকাল ধরিয়া আমি যাহা গভীরভাবে অনুভব করিতেছি— দ্বিধাহীন ও সুস্পষ্টরূপে তাহা আমি প্রকাশ করিতে চাই। ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্টের নিকট চরমপত্রের আকারে আমাদের জাতীয় দাবী পেশ ও স্বরাজের প্রশ্ন উত্থাপনের প্রকৃত সময় ও সুযোেগ উপস্থিত হইয়াছে। কবে যুক্তরাষ্ট্র পরিকল্পনা আমাদের ঘাড়ে জোর করিয়া চাপাইয়া দেওয়া হইবে, বর্ত্তমানের সমস্যা তাহা নহে। ইয়ােরােপে শান্তিস্থাপন না হওয়া পর্য্যন্ত কয়েকবৎসর যদি যুক্তরাষ্ট্র পরিকল্পনা বলবৎ করা না হয়, তবে আমাদের কী করিতে হইবে ইহাই বর্ত্তমানের প্রধান সমস্যা। ইহাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নাই যে, যদি ইয়ােরাপে জোড়াতাড়া দিয়া কোন প্রকারে শান্তি স্থাপিত হয়, তবে গ্রেট ব্রিটেন সুকঠোর সাম্রাজ্যবাদনীতি গ্রহণ করিবে। প্যালেষ্টাইনে আরব ও ইহুদীদিগকে সন্তুষ্ট করিবার যে প্রয়াস ব্রিটিশ করিতেছে, তাহার কারণ এই যে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্রিটেন দুর্বল হইয়া পড়িয়াছে। অতএব আমার অভিমত এই যে, উত্তর প্রদানের সময় নির্দিষ্ট করিয়া আমাদের জাতীয় দাবি সম্বলিত চরমপত্র ব্রিটিশের নিকট পেশকরা উচিত। যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোন সাড়া না পাই অথবা যদি উত্তর অসন্তোষজনক হয়, তবে আমাদের