পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৬৭

প্যাটেল বলিয়াছিলেন “লোকে আমাকে হিটলার বলে, আমি হিটলারের বাবা।” পন্থজীর প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় পরক্ষণেই পণ্ডিত জওহরলাল যখন বৃটেনের পররাষ্ট্র নীতির নিন্দা করিয়া এক প্রস্তাব উত্থাপন করিয়া বক্তৃতা প্রসঙ্গে ঘোষণা করিলেন, বৃটেন ও ফ্রাস গণতন্ত্রের হত্যা (Murder of Democracy) করিয়াছে, তখন অদৃশ্যদেবতা বোধ করি অলক্ষ্যে থাকিয়া গণতন্ত্রের হত্যাপরাধে অপরাধী দক্ষিণপন্থীদের মুখে বৈদেশিক শাসনে গণতন্ত্রহীনতার অভিযোগ শুনিয়া হাস্যসংবরণ করিতে পারেন নাই!

 বামপন্থীদের ঐক্য ও সংহতি নষ্ট হওয়ায় পন্থ-প্রস্তাব পাশ হইয়া গেল। সুভাষচন্দ্র নামে সভাপতি রহিলেন, কিন্তু কংগ্রেস তাঁহার মাথার উপর মহাত্মাজীকে বসাইয়া দিল। স্বাধীনভাবে ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করিবার ক্ষমতাও তাঁহার রহিল না। নিখিল ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতিতে তখন দক্ষিণপন্থীদেরই সংখ্যাধিক্য।

পঁচিশ

 ত্রিপুরীর অধিবেশন সমাপ্ত হইল—এইবার ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের পালা। পন্থজীর প্রস্তাবানুসারে সুভাষচন্দ্র ওয়ার্কিং কমিটি গঠন সম্পর্কে গান্ধীজীর নির্দ্দেশ চাহিয়া পাঠাইলেন। সুভাষচন্দ্র চাহিলেনদক্ষিণপন্থী ও বামপন্থী উভয়দলেরই প্রতিনিধি লইয়া সর্বদলীয় (Composite) ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করিতে। কিন্তু মহাত্মাজী তাহাতে সম্মতি দিলেন না। গান্ধীজী বলিলেন, হয় কেবল বামপন্থী, না হয় কেবল দক্ষিণপন্থী লোক লইয়াই একদলীয় (Homogeneous) ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করিতে হইবে। কিন্তু সুভাষচন্দ্র তাহাতে সম্মত হইলেন না।