পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭২
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

অধিবেশন পর্য্যন্ত গান্ধীজীর Vote of Confidence (সমর্থনের আশ্বাস) চাহিয়া পাঠাইয়াও সুভাষচন্দ্র তাহার কোন জবাব পান নাই। এক পত্রে সুভাষচন্দ্র গান্ধীজীকে লিখেন, “যদি শেষাবধি আপনি এই মতই পোষণ করেন যে সর্ব্বদলীয় মন্ত্রীসভা কার্য্যকরী হইবে না ও একদলীয় মন্ত্রীসভাই একমাত্র অন্যতর উপায় এবং আপনি যদি আমাকেই আমার পছন্দমত মন্ত্রীসভা গঠন করিতে বলেন তাহা হইলে আমি আপনাকে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাইব যে, আপনি অন্ততঃ আগামী অধিবেশন পর্য্যন্ত আমার প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করুন।”

 নিঃসংশয়ে ইহাই বুঝিতে হইবে যে, সুভাষচন্দ্র কংগ্রেসের সংহতি অক্ষুণ্ণ রাখিতে চেষ্টার ত্রুটি করেন নাই। কিন্তু ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠার সকল প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়। ইহার পরে কংগ্রেসের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির দায়িত্ব যে কাহাদের তাহা সহজেই অনুমেয়।

 ওয়ার্দ্ধায় গান্ধীজীর সহিত তিনঘণ্টাব্যাপী দীর্ঘ আলোচনা করিয়াও সুভাষচন্দ্র কোন মীমাংসায় উপস্থিত হইতে পারিলেন না। এই সমস্যা সমাধানের জন্য দেশবাসীর আকুল আবেদন ওয়ার্দ্ধাগঞ্জের নির্মম ও অবিচল মনোভাবে নিস্ফল হইল। আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের (মহাত্মার ‘গুরুদেব’) মধ্যস্থতায় কোন ফল হইল না। ১৬ই এপ্রিল তারিখে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ এসোসিয়েটেড্ প্রেসের প্রতিনিধির মারফৎ স্বদেশবাসীর নিকট নিম্নলিখিত আবেদন জানান। “বর্ত্তমান অপ্রীতিকর অবস্থার কারণ ব্যক্তিগতই হউক বা রাজনীতিগতই হউক, এই অবস্থাঘটিত তিক্ততা নিবার্য্যই হউক কি অনিবার্য্যই হউক, এই বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নাই যে, কোন পক্ষের রাজনৈতিক ক্ষমতা বা চাতুর্য প্রয়োগেই ইহার অবসান হইবে না। প্রায় সর্ববিধ বাস্তব উপকরণ ও অভাব সত্ত্বেও বিঘ্নজটিল পথে আমরা এখনও অগ্রসর হইয়া চলিয়াছি; এই সময়ে জাতীয় ঐক্যরূপ পরমতম প্রয়োজন সম্পর্কে