পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৭৩

মারাত্মক বিস্মৃতি ও চেতনারাহিত্যের নানা কারণ ঘটিয়া থাকিলেও, যে মনোভাব ও চেতনা আমাদের ঐক্যবন্ধন দৃঢ় করিয়া তোলে, তাহার অপেক্ষা শ্রেয় ও পরম সম্পদ বর্ত্তমানে আমাদের আর কিছুই হইতে পারে না।

 এই সময়ে পারস্পরিক সন্দেহ ও দোষানুসন্ধিৎসা আমাদের জাতীয় সংহতির যেরূপ হানিকর, এমন আর কিছুই নয়। কেবলমাত্র আমাদের নৈতিক বুদ্ধির প্রতি আবেদনেই, নৈতিক চেতনার উদ্বোধনেই এই সত্যের উপলব্ধি ঘটিতে পারে।

 অতএব, মহৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ক্ষুদ্র বিষয়গুলিকে যেন আমরা পরম ক্ষমা ও উদারতার সহিত ভুলিয়া যাই—বাঙ্গালা তথা সমগ্র ভারতের স্বদেশীয়গণের প্রতি আমার এই ব্যাকুল আবেদন জ্ঞাপন করিতেছি।”

অবশেষে সুভাষচন্দ্র কংগ্রেসের আভ্যন্তরিক অচল অবস্থা দূরীকরণের জন্য সর্ব্বশেষ প্রচেষ্টা হিসাবে রাষ্ট্রপতি পদে ইস্তফা দেওয়াই সাব্যস্ত করিলেন। এই উদ্দেশ্যে ১৯৩৯ সালের ২৮ শে এপ্রিল কলিকাতায় নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির অধিবেশন আহূত হইল। এই অধিবেশন কলিকাতায় আহ্বান করাতে অনেকেই আশঙ্কা করিলেন বাঙলার জনসাধারণ এইবার ত্রিপুরীর অপমানের প্রতিশোধ লইবে। এই আশঙ্কার কথা জানিতে পারিয়া সুভাষচন্দ্র নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রচার করিয়া সকলকে আশ্বস্ত করিলেন। “যাহারা এই প্রকার আশঙ্কা পোষণ করেন আমার মতে তাঁহারা বাঙলাকে চেনেন না। কোন প্রদেশে নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির অধিবেশন আহ্বান করা সেই প্রদেশের পক্ষে গৌরবের বিষয় এবং সেই প্রদেশের উচিত এই অমূল্য সুযোগ সাগ্রহে গ্রহণ করিয়া তাহার যথোচিত সদ্ব্যবহার করা। এই উপলক্ষে বাঙলার জনসাধারণ ও বিশেষ করিয়া কলিকাতাবাসীদের গৃহে অন্য সকল প্রদেশের অধিবাসী অতিথি হইবেন। আমার নিশ্চিত বিশ্বাস, বাংলাদেশ যে দেশপ্রেম