পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৪
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

ও আতিথেয়তার ঐতিহ্যের অধিকারী বলিয়া যথার্থ ই গর্ব অনুভব করিতে পারে সেই ঐতিহ্যের ধারা অব্যাহত রাখিয়া অভ্যাগতদের সাদরে অভ্যর্থনা করিবে ও বাঙলার চিরাচরিত অতিথিপরায়ণতার পরিচয় দিবে।” নির্দ্দিষ্ট দিনে কলিকাতার ওয়েলিংটন স্কোয়ারে অধিবেশন আরম্ভ হইল। এই অধিবেশনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা—সুভাষচন্দ্রের পতন ও রাজেন্দ্র প্রসাদের অভ্যুত্থান!

 সুভাষচন্দ্র পদত্যাগ করিতে উঠিয়া তাঁহার পদত্যাগের কারণ সম্বন্ধে বলিলেন,—‘আমার উপর মহাত্মাজীর নির্দ্দেশ, আমি যেন পূর্বতন ওয়ার্কিং কমিটির যে কয়জন সদস্য পদত্যাগ করিয়াছেন তাঁহাদের বাদ দিয়া নূতন বৎসরের ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করি। কয়েকটি কারণে আমি গান্ধীজীর এই নির্দ্দেশের অনুরূপ কাজ করিতে পারিতেছি না। তন্মধ্যে দুইটি প্রধান কারণ উল্লেখ করিলেই যথেষ্ট হইবে। প্রথমতঃ, গান্ধীজীর নির্দ্দেশানুসারে নিজমতানুযায়ী ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করিলে তাহা পন্থজীর প্রস্তাবের সর্ত্তবিরোধী হইত। কারণ, পন্থজীর প্রস্তাবে বলা হইয়াছে, আমি যে শুধু গান্ধীজীর ইচ্ছানুসারে ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করিব তাহাই নয়—আমার নির্ব্বাচিত ওয়ার্কিং কমিটির উপর গান্ধীজীর পূর্ণ আস্থা থাকা চাই। কাজেই এমতাবস্থায় আমি নিজে কর্মপরিষদ গঠন করিলে আপনাদিগকে এই আশ্বাস দিতে পারিতাম না যে আমার নির্বাচিত কর্মপরিষদ গান্ধীজীর বিশ্বাসভাজন হইয়াছে। দ্বিতীয়তঃ আমার স্থির বিশ্বাস—আমরা অদূর ভবিষ্যতে ভারতবর্ষে ও ভারতের বহির্দ্দেশে যে সঙ্কটময় পরিস্থিতির সম্মুখীন হইতে চলিয়াছি সে অবস্থায় আমাদের একান্ত কর্ত্তব্য খুব বেশী সংখ্যক কংগ্রেস কর্মীর সমর্থন পাইতে পারে এইরূপ সর্বদলীয় মন্ত্রীসভা গঠন করা। এবং এইরূপ সর্বদলীয় মন্ত্রীসভা কংগ্রেসের গঠন-প্রকৃতির অনুরূপ হইত।’

 ‘আমি যখন মহাত্মার উপদেশ কার্য্যে পরিণত করিতে পারিলাম