পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছাব্বিশ

 ছাত্রজীবন হইতেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াইতে সুভাষচন্দ্র কোন দিন পশ্চাৎপদ হন নাই। কংগ্রেস হাই কমাণ্ডের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র ও অসঙ্গত প্রভুত্বস্পৃহা তাঁহার অন্তরের বিদ্রোহীকে আবার ক্ষেপাইয়া তুলিল। কংগ্রেসকে একটি সংগ্রামশীল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সুভাষচন্দ্রের অনেক দিনের লক্ষ্য ছিল। দক্ষিণপন্থীদের বিপ্লববিমুখতা ও আপোষমুখী মনোভাবের দরুণই তাঁহাদের সহিত সহযোগিতা রক্ষা করা সম্ভব হইল না। কিন্তু পরাজয়ের গ্লানি কোনদিন যাঁহাকে স্পর্শ করে নাই এই আঘাতে হাল ছাড়িয়া দিবার পাত্র তিনি নহেন। সুভাষচন্দ্র এইবার কংগ্রেসের বামপন্থীদল ও কংগ্রেসের বাহিরের অন্যান্য সংগ্রামশীল দলগুলিকে সংঘবদ্ধ করিয়া একটি অখণ্ড বিরাট প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তোলার কার্য্যে সমস্ত শক্তি নিয়োগ করিলেন। তাঁহার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, ছাত্র প্রতিষ্ঠানগুলি তাঁহার এই সংগ্রামাত্মক নীতি গ্রহণ করিবে ও দেশের সমস্ত গণ-আন্দোলনই তাঁহার সংগ্রামশীল নেতৃত্বে বিশ্বাস স্থাপন করিবে। সুতরাং, সমস্ত বামপন্থী উপাদানকে সংহত করিবার উদ্দেশ্যে তিনি দেশবাসীর নিকট আবেদন জানাইলেন। এই হইতেই অগ্রগামী দল “ফরওয়ার্ড ব্লক”-এর উৎপত্তি।

 অনেকের ধারণা, ত্রিপুরীতে যে সমস্ত ঘটনা ঘটিয়াছে তাহার প্রতিক্রিয়াস্বরূপ সুভাষচন্দ্র ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’-এর সংগঠনে প্রবৃত্ত হন, কিন্তু এই ধারণা সত্য নহে। বস্তুতঃ পক্ষে সুভাষচন্দ্রের রাজনৈতিক জীবনের একটি প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল সমস্ত প্রগতিপন্থী ও সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ ও সংহত করিয়া ভারতের স্বাধীনতা অর্জ্জনের জন্য চূড়ান্ত সংগ্রাম আরম্ভ করা। তাঁহার রাজনৈতিক কর্মধারায় এই প্রগতিপ্রবণ চিন্তা বহু পূর্বেই বিকাশপ্রাপ্ত হইয়াছিল। ১৯২৭ সালে মান্দালয়