পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

জেল হইতে মুক্তিলাভের পর হইতে তিনি কংগ্রেসের আপোষমূলক ও নরমপন্থী প্রত্যেকটি নীতি ও কার্য্যের বিরোধিতা করেন। মাদ্রাজ কংগ্রেসে পূর্ণ স্বাধীনতার প্রস্তাবে সুভাষচন্দ্রের সহিত দক্ষিণপন্থীদের সর্বপ্রথম মতবিরোধ ঘটে। ইহার পরে স্বায়ত্তশাসনের ভিত্তিতে রচিত ‘নেহরু কমিটি’ প্রণীত ভারতবর্ষের গঠনতন্ত্র অনুমোদন করিবার উদ্দেশ্যে লক্ষ্ণৌয়ে যে সর্ব্বদলীয় সম্মেলনের অনুষ্ঠান হয় সেখানে তিনি কংগ্রেসের এই আপোষমূলক নীতির তীব্র প্রতিবাদ করেন এবং জওহরলাল ও অন্যান্য বামপন্থী নেতৃবৃন্দের সহায়তায় কংগ্রেসের অভ্যন্তরে Independence League নাম দিয়া একটি বামপন্থী প্রতিষ্ঠান গঠন করিতে সক্ষম হন। ঐ বৎসর ডিসেম্বর মাসে কলিকাতায় কংগ্রেসের যে বাৎসরিক অধিবেশন হয়, সেই অধিবেশনে স্বাধীনতা লীগের সভ্যগণ কংগ্রেসের উদ্দেশ্য যাহাতে পূর্ণ স্বাধীনতা বলিয়া ঘোষিত হয় তজ্জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। এই সময় হইতেই কংগ্রেসের এই বামপন্থী প্রতিষ্ঠানটি পরবর্ত্তী অধিবেশনের জন্য শক্তি সঞ্চয় করিতে ও প্রস্তুত হইতে থাকে এবং তদুদ্দেশ্যে ছাত্র, শ্রমিক, কিষাণ, সমাজতন্ত্রী ও সাম্যবাদীদের সংঘবদ্ধ করিতে বদ্ধপরিকর ফলে, কংগ্রেসের লাহোর অধিবেশনে পূর্ণ-স্বাধীনতার প্রস্তাব গৃহীত হয়।

 ১৯৩০ হইতে ১৯৩৩ সাল পর্য্যন্ত কংগ্রেসের ইতিহাস গভর্ণমেণ্টের সহিত সর্বপ্রকার অসহযোগ ও ব্যাপক আইন অমান্য আন্দোলনের ইতিহাস। প্রত্যক্ষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ায় কংগ্রেসের রক্ষণশীল ও প্রগতিপন্থীদলের মধ্যে কোন প্রভেদ রহিল না। কিন্তু, ১৯৩৩ সালে গান্ধীজী কর্ত্তৃক আইন অমান্য আন্দোলন প্রত্যাহারের ফলে পুনরায় বামপন্থীদলের প্রয়োজন দেখা দিল। সুভাষচন্দ্র এই সময় স্বাস্থ্যোন্নতির জন্য ভিয়েনায় ছিলেন। গান্ধীজীর কার্য্যের নিন্দা করিয়া পরলোকগত বিঠলভাই প্যাটেলের সহিত যুক্তভাবে তিনি এক বিবৃতি প্রচার করেন। ১৯৩৪ সালে কংগ্রেস