পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৮৫

১৯২২ সালে গয়া কংগ্রেসে স্বরাজ্যদলের বিদ্রোহ কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে কিছু সময়ের জন্য ভ্রান্ত-ধারণা, বিরোধ এমনকি তিক্ততার সৃষ্টি করিয়াছিল কিন্তু শেষ পর্য্যন্ত কংগ্রেস স্বরাজ্যদলের কর্মপন্থা গ্রহণ করিয়া নূতন পরিস্থিতির সহিত সামঞ্জস্য বিধান করিতে বাধ্য হয়। বর্ত্তমানক্ষেত্রেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হইতে পারে। ইহা যেন কেহ বিস্মৃত না হন যে কংগ্রেসের আভ্যন্তরিক ঐক্য বজায় রাখিতে দক্ষিণ পক্ষের চেয়ে বামপক্ষ কম উদ্‌গ্রীব। এই কারণেই বামপক্ষ সর্ব্বদলীয় মন্ত্রীসভা গঠনের পক্ষপাতী। অপরপক্ষে, দক্ষিণপক্ষ একদলীয় মন্ত্রীসভা গঠন করিতে আগ্রহান্বিত। ফলতঃ, বামপক্ষ কংগ্রেসের মধ্যে স্থায়ী ও খাঁটি জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্যই কাজ করিতে থাকিবে। এই সঙ্কট সময়ে ফরওয়ার্ড ব্লক গঠনের এই উদ্যম ও চেষ্টা অনিবার্য্য কারণে ও দক্ষিণপন্থীদের অনমনীয় মনোভাবের দরুণই অবশ্যম্ভাবী হইয়া উঠিয়াছে।

 গত ২৫ বৎসরের কংগ্রেসের ইতিহাস আলোচনা করিলে কংগ্রেসের মধ্যে বিভিন্ন দলের অস্তিত্ব সপ্রমাণ হইবে। ‘অহিংস অসহযোগ’ গ্রহণের পর হইতে কংগ্রেস কর্মিগণ বহুদিন পর্য্যন্ত স্বরাজ্যদল ও ‘নো-চেঞ্জার’ দলে বিভক্ত ছিল। কংগ্রেসের অভ্যন্তরে কংগ্রেস সমাজতন্ত্রীদলের কথা পূর্বেই উল্লেখ করা হইয়াছে। সেই সময়ে “কংগ্রেস ন্যাশনালিষ্ট” নামে অপর একটি দলেরও অস্তিত্ব ছিল—বাঙলায় এই দলটি একসময়ে বেশ শক্তিশালী হইয়া উঠিয়াছিল। কিষাণ সভার অনেক সদস্যই কংগ্রেসকর্মী ও কংগ্রেসের সভ্যশ্রেণীভুক্ত—শ্রমিকদলের মধ্যে কংগ্রেস সদস্যের সংখ্যা কম নহে। গান্ধী-সেবা-সংঘের সভ্যরা কংগ্রেসের কার্য্যকলাপের সহিত প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন এবং দক্ষিণপন্থীদের সহিত যুক্ত হইয়া রাষ্ট্রনীতিক আলোচনার অংশ গ্রহণ করিতেন। কাজেই দেখা যাইতেছে, কংগ্রেসের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেসকর্মিগণ একাধিক দলের সহিত যুক্ত ছিলেন ও এখনও আছেন। এই দিক হইতে বিচার