পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৮৯

আর বামপন্থীদের সহিত সহযোগিতা সম্ভব নয়—বামপন্থীরা বড়ই অশান্তি ও বিঘ্ন সৃষ্টি করিতেছে।

 ৭। পরিশেষে ১৯৩৯ সালে এই অভিযোগ চরম পরিণতি লাভ করিল—দক্ষিণপন্থীদল ইচ্ছা করিয়াই বামপন্থীদের সহিত সহযোগিতা লোপ করিতে সিদ্ধান্ত করিলেন।

 একমতাবলম্বী মন্ত্রণা পরিষদ বা ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের জন্য বর্ত্তমানে দক্ষিণপন্থীদের এই জেদের গভীরতর তাৎপর্য ত ইহাই। তিন বৎসর বাবৎ তাহারা বামপন্থীদের সহিত একযোগে কাজ করিতে পারিল, কিন্তু আর তাহারা এইরূপ করিতে পারিবে না কেন? কারণ এই যে, কংগ্রেসের মধ্যে বামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি দক্ষিণপন্থীরা নিরুদ্বেগে আর সহ্য করিতে পারিতেছে না।

 যখন নূতন মন্ত্রণ-পরিষদ বা ওয়ার্কিং কমিটি গঠনের এই সমস্যা সমাধানের জন্য ১৯৩৯ সালের ২৯ শে এপ্রিল কলিকাতায় নিখিল ভারত রাষ্ট্রীর সমিতির বৈঠক বসিল, তখন দেখা গেল যে, দক্ষিণপন্থীদের সহিত সহযোগিতাকামী বামপন্থীদল বিভিন্ন মতাবলম্বী বা মিশ্র ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করিতে আগ্রহশীল। কিন্তু দক্ষিণপন্থীদল বামপন্থীদের সহিত সহযোগিতা রক্ষা করিতে চাহিল না—একমতাবলম্বী ওয়ার্কিং কমিটি গঠনই তাহাদের একমাত্র শ্লোগান হইয়া উঠিল। ফলে, দক্ষিণপন্থীরাই আপোষ, সহযোগিতা ও ঐক্যের মূলোৎপাটন করিল।

 বামপন্থীদের পূর্ণ আত্মসমর্পণ—ইহাই বর্ত্তমানে দক্ষিণীদের কামনা। ঐক্যের খাতিরে কি বামপক্ষ ইহাতে সম্মত হইবে? দক্ষিণীদের নিকট আত্মসমর্পণ করিলে ইহার ফলাফল কি হইবে? ইহাতে কি প্রগতি দ্রুতায়িত হইবে, না প্রতিক্রিয়াশীল দলেরই শক্তিবৃদ্ধি হইবে?

 দক্ষিণপন্থিগণ বামপন্থীদের সহিত সহযোগিতা স্থাপনে অস্বীকৃত; তবুও ঐক্যপ্রতিষ্ঠার খাতিরে আমরা বামপন্থী দল তাহাদের নিকট আত্ম-