পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৯৩

 ১। ব্লকের কার্য্যক্রম—প্রত্যেক ভারতবাসীর নিজ নিজ ধর্মসম্মত উপাসনা করিবার পূর্ণ স্বাধীনতা আছে। কিন্তু রাজনীতিতে রাজনৈতিক সমস্যাসমূহ কেবলমাত্র রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গী হইতেই আলোচিত হইবে।

 ২। প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন প্রবর্ত্তনের পর হইতে প্রাদেশিকতা ও সাম্প্রদায়িকতা উৎকটরূপে বিস্তারলাভ করিতেছে। ইহাদের উচ্ছেদ সাধনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করিতে হইবে।

 ৩। কংগ্রেস শাসনযন্ত্র অধিকার করিবার ফলে অথবা আইনসভায় মন্ত্রিত্ব গ্রহণের ফলে কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে বর্ত্তমানে কোন প্রকার দুর্নীতি দেখা দিয়া থাকিলে তাহার মূলোৎপাটন করিতে হইবে।

 (৪) সর্বপ্রকার কায়েমী স্বার্থের প্রভাব তথা কংগ্রেসী মন্ত্রিসভার প্রাধান্য বিস্তার হইতে কংগ্রেসকে মুক্ত রাখিতে হইবে। বর্ত্তমান এককর্ত্তৃত্বের প্রভাবের পরিবর্ত্তে কংগ্রেসে গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করিতে হইবে। সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র দেশে কংগ্রেসের আমূল সংস্কার সাধন করিয়া ইহাকে একটি সক্রিয় প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করিতে হইবে।

 (৫) আমূল পরিবর্ত্তনকামী বৈপ্লবিক মনোভাব নিয়া কংগ্রেসের পার্লামেণ্টারি কার্য্যক্রম অধিকতর উদ্যমের সহিত বাস্তবে পরিণত করিতে হইবে। ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্টের রক্ষণাধীনে নয়—কংগ্রেসেরই রক্ষণাধীনে কংগ্রেস-মন্ত্রিসভা কাজ করিবে। প্রতিদ্বন্দ্বী গভর্ণমেণ্ট স্থাপনের উদ্দেশ্য লইয়াই সমগ্র দেশের কংগ্রেসী মন্ত্রিসভা ও কংগ্রেসী প্রতিষ্ঠানগুলি কাজ করিয়া যাইবে।

 (৬) অর্থনৈতিক মুক্তিলাভের জন্য কৃষক ও শ্রমিকদের সংগ্রাম সক্রিয়ভাবে সমর্থন করা হইবে।

 (৭) কিষাণ সভা, ট্রেড ইউনিয়ন, ইয়ুথ লীগ, ছাত্র ফেডারেশন প্রভৃতি অপরাপর সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী সঙ্ঘগুলি ও কংগ্রেসের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংযোগ স্থাপন করিতে হইবে।