পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২১১

সভাপতিত্বে বাংলার এক বিপুল জনসভা একযোগ এই অভিমত ব্যক্ত করে যে, কংগ্রেসের দক্ষিণপন্থী দল বামপন্থীদিগকে কংগ্রেস হইতে বিতাড়িত করিবার জন্যই এই কাণ্ড করিতেছে। বঙ্গীয় কংগ্রেস কমিটির পরিচালকগণ এই মর্মে এক প্রস্তাব গ্রহণ করেন যে, ‘মূল কংগ্রেসের কার্যনির্বাহক সমিতি বাংলার উপর এক বিশেষ সমিতি চাপাইয়া দিয়াছেন। তাহাদের এই কার্য্য কংগ্রেসের আভ্যন্তরিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ধ্বংসকর।’ উক্ত প্রস্তাবে ইহাও বলা হয় যে “বর্ত্তমান বঙ্গীয় কংগ্রেস কমিটি নিয়মানুগভাবে গঠিত হইয়াছে। সুতরাং উহা কার্য করিতে থাকিবে এবং ইহার পরিচালনাধীন কংগ্রেস কমিটিগুলি বিশেষ (Ad-hoc) কমিটির সহিত কোনরূপ সহযোগিতা করিতে পারিবে না।”

 কাজেই, ভারতের রাজনৈতিক জীবনের এক মহাসন্ধিক্ষণে বল্লভ-রাজেন্দ্র-শাসিত কংগ্রেসের সহিত বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির বিরোধ অপরিহার্য হইয়া উঠিল। পুণা চুক্তির সময় ও সুভাষচন্দ্রের দ্বিতীয়বার সভাপতি নির্ব্বাচনের সময় হইতেই এই বিরোধ ঘনীভূত হইতে থাকে। এবার কংগ্রেসের সহিত বঙ্গীয় প্রাদেশিক সমিতির সম্পূর্ণ বিচ্ছেদ ঘটিল। ১৯৪০ সালে ফেব্রুয়ারি-মার্চ্চ মাসে ওয়ার্কিং কমিটির পাটনা অধিবেশনে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটি ও তাহার কার্যকরী সমিতিকে বে-আইনী ঘোষণা করা হয়। বাংলার অধিকাংশ কংগ্রেসকর্মী ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্তের বিরোধী ছিলেন—তাঁহারাই প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটি পরিচালনা করিতেন। এখন তাঁহাদিগকে বিতাড়িত করিয়া যে দল সংখ্যায় অল্প তাহাদের উপরেই প্রাদেশিক কংগ্রেসের পরিচালনাভার অর্পিত হইল। এই স্বেচ্ছাচারিতা ও অবিবেচনার ফলে বাংলার কংগ্রেস আন্দোলন শক্তিহীন হইয়া পড়ে।

 ১৯৪০ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে ঢাকা জেলার মালিকান্দা গ্রামে গান্ধী সেবা-সঙ্ঘের বার্ষিক উৎসব উপলক্ষে মহাত্মা গান্ধী বাংলায় আগমন