পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২১২
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

করেন। বহুদিন পরে মহাত্মা গান্ধী বাংলায় আসিলেও সেবার জনসাধারণের মধ্যে তাঁহাকে দেখিবার জন্য ও মহাত্মার বাণী শুনিবার জন্য তেমন আগ্রহ ও উৎসাহ দেখা যায় নাই। বাংলার সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় নেতা সুভাষচন্দ্রের প্রতি ওয়ার্কিং কমিটির অবিচারের ফলেই বাংলাদেশ গান্ধী ও কংগ্রেস নেতৃবর্গের প্রতি পূর্ব্বেকার মত অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা প্রদর্শনে বিরত হইয়াছে, মহাত্মা তাহা নিজচক্ষেই দেখিয়া গেলেন।

 ইতিমধ্যে ফরওয়ার্ড ব্লকের সংগ্রামশীল কর্মপন্থা দিকে দিকে দেশের যুবশক্তিকে আকর্ষণ করিতে থাকে। ফরওয়ার্ড ব্লক ক্রমেই শক্তিশালী হইয়া উঠে এবং ভারতের সর্বত্র শাখা-প্রশাখা বিস্তার করিয়া তাহারা কর্মক্ষেত্র সম্প্রসারিত করিতে সক্ষম হয়। সুভাষচন্দ্রের আন্তরিকতা ও কর্মোদ্যম, ত্যাগ ও নিষ্ঠা, বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গী ও সর্বোপরি তাঁহার চৌম্বক ব্যক্তিত্ব সকল বামপন্থী কংগ্রেস কর্মীদিগকেই ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রতি আকৃষ্ট করিতে সমর্থ হয়। কংগ্রেসের দক্ষিণপন্থী বহু বিশিষ্ট সভ্য ও ফরওয়ার্ড ব্লকে যোগদান করে। সুভাষচন্দ্র ভারতের সর্বত্র এই নূতন দলের নীতি ও কার্যক্রম ব্যাখ্যা করিয়া বক্তৃতা করেন ও সর্বত্রই জনসাধারণের মধ্য হইতে অদ্ভুত সাড়া পান। এই ভ্রমণ-বৃত্তান্ত ‘Glimpses of My Tour’ নাম দিয়া ফরওয়ার্ড ব্লক পত্রে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। এই সময় ফরওয়ার্ড ব্লকের লক্ষ্য ছিল প্রধানতঃ তিনটি (ক) Left-consolidation (বাম পক্ষের সংহতি); (খ) Establishment of real and effective unity within the Congress (কংগ্রেসেরে মধ্যে প্রকৃত ও কার্য্যকরী ঐক্য প্রতিষ্ঠা); (গ) Resumption of National struggle in the name of the Congress (কংগ্রেসের নামে জাতীয় আন্দোলন পুনরায় আরম্ভ করা)। দক্ষিণ পক্ষের প্রবল বিরোধিতাসত্ত্বেও সুভাষচন্দ্র এই উদ্দেশ্য গুলিকে কার্য্যে পরিণত করিতে প্রাণপণ চেষ্টা করেন। অপরদিকে কংগ্রেস হাই কমাণ্ড ও গান্ধীপন্থী নেতারা