পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২২৩

হিন্দু-মুসলমানের যুক্ত আন্দোলন চলিতে থাকে। অবশেষে দমননীতির মাশ্রয় লইয়াও যখন আন্দোলন বন্ধ করা গেল না তখন উক্ত মনুমেণ্ট অপসারিত করা হয়।

 হল্‌ওয়েল মনুমেণ্ট আন্দোলন আরম্ভ হইবার পূর্ব্বদিন ১৯৪০ সালের ২রা জুলাই একান্ত অপ্রত্যাশিতভাবে ভারতরক্ষা আইনে সুভাষচন্দ্রকে গ্রেফ্‌তার করা হয়। কিছুদিন পরে বিলাতের কমন্স সভায় এক প্রশ্নের উত্তরে ভারতসচিব এমেরী ঘোষণা করেন যে হল্‌ওয়েল স্তম্ভ অপসারণের আন্দোলনে নেতৃত্ব গ্রহণের জন্যই সুভাষ কারারুদ্ধ হন। বন্দী অবস্থায় সুভাষচন্দ্র উপনির্ব্বাচনে ভারতীয় পরিষদের সভ্য নির্ব্বাচিত হন। জেলে থাকাকালীন সুভাষচন্দ্রের বিরুদ্ধে আরও দুইটি রাজদ্রোহের অভিযোগ আনীত হন। এক, ১৯৩৯ সালের এপ্রিল মাসে কলিকাতায় মহম্মদআলী পার্কে রাজদ্রোহমূলক বক্তৃতা প্রদান, অপরটি ১৯৩৯ সালের ১৪ই মে ফরওয়ার্ড ব্লক পত্রে The Day of Reckoning (হিসাব নিকাশের দিন) শীর্ষক সম্পাদকীয় প্রবন্ধ প্রকাশ।

 আসল কথা, ইউরোপে যুদ্ধের অবস্থা তখন গ্রেটবৃটেনের প্রতিকূল। স্বাধীন ফ্রান্সের পতন হইয়াছে—গ্রেট বৃটেনও জার্মানীর কামানের মুখে আসিয়া পড়িয়াছে। ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্ট দেখিলেন এই সময় সুভাষচন্দ্রকে বাহিরে রাখা সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থের ও যুদ্ধরত গ্রেট বৃটেনের পক্ষে বিপজ্জনক হইবে। কোন অজুহাতে তাঁহাকে আটক রাখাই এখন সরকারের আসল উদ্দেশ্য। কাজেই, বৎসরাধিক কালের পুরাতন অভিযোগ আনিয়া তাঁহাকে বিনাবিচারে কারাগৃহে বন্দী করিয়া রাখা হইল। অবশেষে ১৯৪০ খৃঃ ২০শে নভেম্বর সুভাষচন্দ্র অনশন ধর্মঘট আরম্ভ করেন। অনশন ব্রত গ্রহণ করিবার পূর্বে তিনি বাংলার গভর্ণর, প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সহযোগী মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে তাঁহার সিদ্ধান্ত জানাইয়া একখানি পত্র লিখেন। সুভাষচন্দ্র এই পত্রখানিকে “My Political