পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২২৭

আরম্ভ হইল তাঁহার জীবনের এক বিচিত্র ও গৌরবময় অধ্যায়। কংগ্রেসের নেতা হিসাবে, অহিংস সংগ্রামের সৈনিক হিসাবে, আপোষ-বিরোধী বিপ্লবী হিসাবে যিনি ভারতীয় গণ-নায়কদের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের দাবী করিতে পারিতেন আজ তাঁহারই নেতৃত্বে ও সংগঠনে গড়িয়া উঠিল স্বাধীন ভারতবাসীর গভর্ণমেণ্ট ও সামরিক শক্তি। সমস্ত পৃথিবী বিস্ময়চকিত হইয়া দেখিল—রাইফেল হস্তে ভারতীয় ফৌজ তাহাদের স্বাধীন গভর্ণমেণ্টেকে রক্ষা করিতেছে—মাতৃভূমির মুক্তির জন্য মৃত্যুপণ করিয়া লড়িতেছে।

 কঠিন বিপদ তুচ্ছ করিয়া, নিজের জীবন বিপন্ন করিয়া, দুর্গম পথ অতিক্রম করিয়া সেই আজীবন বিপ্লবী অকুতোভয়ে তাঁহার কর্ত্তব্য সম্পাদনে চলিলেন। যেদিন কারাগারে সুভাষচন্দ্র উপলব্ধি করেন যে কেবলমাত্র আভ্যন্তরীণ সংগ্রামেই দেশ স্বাধীন করা যাইতে পারে না সেইদিনই তাঁহার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা স্থির হইয়া গেল।

ত্রিশ

 সম্প্রতি উত্তমচাঁদ কর্ত্তৃক সুভাষচন্দ্রের ভারত ত্যাগ বিবরণ প্রকাশিত হইয়াছে। অনেকেই এই বৃত্তান্ত সত্য ঘটনা হিসাবে গ্রহণ করিয়াছেন। আবার এই বিষয়ে অন্যরূপ বহু গুজব ও জনশ্রুতিও সংবাদপত্র মারফৎ প্রচারিত হইয়াছে। সে যাহাই হউক, একমাত্র সুভাষচন্দ্র ব্যতীত এই রহস্যের চূড়ান্ত সমাধান কেহই করিতে পারিবেন না। দেশবাসী স্বয়ং নেতাজির মুখ হইতেই তাঁহার দুঃসাহসিক অভিযানের রোমাঞ্চকর কাহিনী জানিতে পারিবে—এই আশায় আমরা এই বিষয়ে আলোচনায় ক্ষান্ত রহিলাম।