পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩০
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

মনে করিলাম।’ আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, এখান হইতে যদি আপনাকে সরাসরি মস্কো যাইতে না দেওয়া হয় তবে আপনি কি করিবেন? তিনি বলিলেন, ‘যাইবার পথে প্রথমেই আমি মস্কোতে নামিয়া সেখানে থাকিয়া যাইবার জন্যই চেষ্টা করিয়া দেখিব। যদি না পারি বার্লিন ও রোমের রুশদূতের মারফৎ ব্যবস্থা করিব। ঐ সকল স্থানে দূতাবাসের সহিত সহজেই যোগাযোগ স্থাপন করা যায়। কাজেই ভরসা হয়, কোন-না-একটা ব্যবস্থা নিশ্চয়ই করিয়া উঠিতে পারিব। যে ভাবেই হোক, শীঘ্রই মস্কোয় পৌছিতে পারিব বলিয়া আশা করি।’

 চক্রশক্তি তাঁহাকে মস্কো যাইতে দিবে কিনা সে বিষয়ে আমি সন্দেহ প্রকাশ করিলাম। চক্রশক্তি যদি এ সময়ে তাঁহার ন্যায় প্রভাবশালী কোন ভারতীয়কে পায় তবে তাঁহাকে রাশিয়ার কাজে লাগাইতে না দিয়া নিজেদের কাজে লাগাইবার চেষ্টাই করিবে। বোসবাবু বলিলেন—‘চক্রশক্তি যে আমাকে সহজে রাশিয়ানদের হাতে ছাড়িয়া দিবে না একথা আমিও জানি। তবুও আমি মস্কো যাওয়ার জন্যই যথাসাধ্য চেষ্টা করিব। বর্ত্তমান সময়ে একমাত্র রাশিয়াই ভারতবর্ষকে স্বাধীনতা অর্জ্জনে সাহায্য করিতে পারে। অপর কোন দেশই আমাদিগকে সাহায্য করিবে না। এই জন্যই আমি মস্কো ছাড়া অন্য কোথাও যাইতে চাহি না। এই যুদ্ধের মধ্যেই যদি ভারতবর্ষ স্বাধীন হইতে না পারে তবে আর পঞ্চাশ বৎসরের মধ্যে স্বাধীনতা অর্জ্জন করিতে সমর্থ হইবে না। অবশ্য যদি তাঁহার পূর্বেই কোন সশস্ত্র বিপ্লব সংঘটিত হয়, তবে সে কথা স্বতন্ত্র।

 উত্তমচাঁদ বর্ণিত সুভাষচন্দ্রের অন্তর্দ্ধান কাহিনী হইতে আমরা জানিতে পারি, রাশিয়ান দূতাবাসের সহিত মস্কো যাইবার ব্যবস্থা করিয়া উঠিতে না পারায় অগত্যা সুভাষচন্দ্র ইতালিয়ান দূতাবাসের সহিত কথা-বার্ত্তা বলেন। শেষ মুহূর্ত্ত পর্য্যন্তও তিনি মস্কো যাইবার সঙ্কল্প পরিত্যাগ করেন নাই। প্রথমেই ভগৎরাম ওরফে রহমৎ খাঁর মুখে শুনিতে পাই—“আমরা চক্রশক্তির