পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২৩৭

গান্ধীজি গণ-আন্দোলন আরম্ভ করেন। গান্ধীজি বরাবরই আপােষরক্ষার জন্য আগ্রহশীল। লাহাের কংগ্রেসে পূর্ণ স্বাধীনতার প্রস্তাব গ্রহণ করা হইলেও “স্বাধীনতার সার” (Substance of Independence) পাইলেই গান্ধীজি আপােষ করিবেন—এই মর্মে ১৯৩০ সালের ৩০শে জানুয়ারি গান্ধীজি এক বিবৃতি প্রকাশ করেন। এই বিবৃতিতে স্বাধীনতার সার বলিয়া যে ১১ দফা দাবি করা হয় তাহা হইতে বুঝা যাইবে গান্ধীজির মনােভাব মূলতঃ সস্কারপন্থী (Reformist)। গান্ধীজির সহিত সুভাষচন্দ্রের যে সংঘর্ষ তাহা মূলতঃ “সংস্কার-পন্থী” আদর্শের সহিত বৈপ্লবিক আদর্শের সংঘর্ষ।

 ১৯৩১ সালের ৪ঠা মার্চ গান্ধী-আরুইন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আন্দোলন চলিতে থাকা সত্ত্বেও আন্দোলনের এইরূপ অকাল পরিসমাপ্তিতে সুভাষচন্দ্র তীব্র অসন্তোষ জ্ঞাপন করেন। গােল টেবিল বৈঠকে যােগদান করিয়া গান্ধীজি হতাশচিত্তে বলেন “আমি দেখিলাম, এই বৈঠকে যে সকল প্রতিনিধি মনােনীত হইয়া আসিয়াছেন তাহারা দেশের জনসাধারণের প্রতিনিধি নহেন—সরকারের স্বার্থে সরকার মনােনীত প্রতিনিধি। বৈঠকে যােগদান করিয়াগান্ধীজি যে অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছিলেন, করাচী কংগ্রেসের অধিবেশনের সময়ে আহূত নিখিল ভারত নও-জোয়ান ভারত সভায় সভাপতির আসন হইতে সুভাষচন্দ্র অনুরূপ আশঙ্কাই জ্ঞাপন করিয়াছিলেন। সুভাষচন্দ্রের আশঙ্কাই ফলিয়া গেল। কাজেই আমরা দেখিতেছি, সুভাষচন্দ্র যে কোন সমস্যার প্রারম্ভেই বাস্তব ও দূরদৃষ্টি সহায়ে যে অভিমত জ্ঞাপন করেন, শেষ পর্য্যন্ত তাহাই ঘটে ও গান্ধীজিও তাহাই স্বীকার করিয়া লন। ১৯৩৩ সালের মে মাসে গান্ধীজি দ্বিতীয় আইন অমান্য আন্দোলন ছয় সপ্তাহের জন্য প্রত্যাহার করেন। পরে তিনি আরও ছয় সপ্তাহের জন্য ব্যাপক আইন অমান্য আন্দোলন বন্ধ করিয়া ব্যক্তিগত আইন অমান্য