পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪০
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

 কী করিয়া শৃঙ্খলাপরায়ণ ও সুসংগঠিত সেনাবাহিনীর বিরাট ক্ষমতাবলে একটা জাতির ভাগ্য নিয়ন্ত্রিত হয়, ইয়ােরােপে প্রবাসকালে সুভাষচন্দ্র তাহা প্রত্যক্ষ দেখিয়াছিলেন। ইটালিতে ফ্যাসিস্ত মুসোলিনীর ও জার্মানিতে নাৎসী হিটলারের অভ্যুত্থানের মূলে এই কারণ নিহিত ছিল। তাই সুভাষচন্দ্র ইটালী ও জার্মানির বাহিনীর আভ্যন্তরিক সংগঠন প্রনালী গভীর অভিনিবেশ সহকারে অধ্যয়ন ও পরীক্ষা করিয়াছেন। এইজন্য অনেকে সুভাষচন্দ্রকে ফ্যাসিস্ত বলিয়া প্রচার করিয়াছেন। এই প্রচারের প্রতিবাদ করিয়া সুভাষচন্দ্র জেনেভা হইতে এই মর্মে এক বিবৃতি দান করেন—“আমি বলিতে চাই যে আমার দৃষ্টিভঙ্গি ও রাজনৈতিক বিশ্বাসের কোন মৌলিক পরিবর্ত্তন ঘটে নাই। আমার অভিমত এই যে, বর্ত্তমানের দেশবিদেশের বিভিন্ন আন্দোলনের মধ্যে যাহা প্রয়ােজনীয় ও মঙ্গলপ্রদ, ভারতকে তাহাদের সমম্বয় সাধন করিয়া এক বিশিষ্ট উপযোগী রাষ্ট্রাদর্শ নির্ণয় করিতে হইবে। এই জন্য ইয়ােরােপ ও আমেরিকার সমস্ত রাষ্ট্রিক আন্দোলন ও পরীক্ষামূলক রাষ্ট্রিক পদ্ধতিই আমাদিগকে আলোচনা করিতে হইবে। এতদুদ্দেশ্যে আমাদের পুর্বগঠিত সংস্কার ও বিশেষ মতানুরক্তি পরিহার করিয়াই নিরপেক্ষ ও মুক্তদৃষ্টি লাভ করা প্রয়ােজন।” এককালে ভারতসচিব লর্ড জেটল্যাণ্ড সুভাষচন্দ্রকে কারাগৃহে বন্দী রাখিবার যুক্তি হিসাবে বলিয়াছিলেন—He is a man of wonderful organising abilities—almost a genius; and the British Empire could not afford to keep him outside the prison” সংঘ সংগঠনের অসামান্য প্রতিভা লইয়া সুভাষচন্দ্র জন্মিয়াছেন। ভারতের বাহিরে আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠনে সুভাষচন্দ্রের এই প্রতিভা চুড়ান্তরূপে স্বীকৃত হইয়া গিয়াছে। মনে হয়, ভারতবর্ষে তাঁহার ন্যায় সংগঠন-বীর আধুনা আর জন্মগ্রহন করেন নাই। সম্প্রতি মহাত্মা গান্ধীজি তাঁহার এই প্রতিভার ভূয়সী প্রশংসা