পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২৪৫

Anglo-Italian tension in the Mediterranean.” দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হইলে সুভাষচন্দ্র কংগ্রেসের নিকট বার বার আবেদন জানাইয়াছেন সমস্ত ব্রিটিশ বিরোধী শক্তি সমূহের সহায়তায় স্বাধীনতার দাবীকে অমোঘ করিয়া তুলিবার জন্য। কিন্তু তাঁহার সেই আবেদন অরণ্যে রোদনমাত্র হইল। গান্ধীজি কিছুতেই সংগ্রাম আরম্ভ করিলেন না। সেই সংগ্রাম শেষপর্যন্ত সুরু করিতেই হইল। ১৯৪২ সালের আগষ্ট প্রস্তাব কংগ্রেস গ্রহণ করিল। কিন্তু তখন বহু বিলম্ব হইয়া গিয়াছে, প্রকৃত লগ্ন উত্তীর্ণ হইয়া গিয়াছে। আমরা দেখিলাম, ১৯২৮ সালে গান্ধীজিকে আইন অমান্য আন্দোলন আরম্ভ করিতে সুভাষচন্দ্র অনুরোধ করেন—গান্ধীজি অস্বীকৃত হন। দুই বৎসর পরে ১৯৩০ এ গান্ধীজি প্রথম আইন অমান্য আন্দোলন আরম্ভ করেন। ১৯৩৯ ও ১৯৪০ এ ও সুভাষচন্দ্র ভারতব্যাপী মুক্তি আন্দোলন আরম্ভ করিবার জন্য গান্ধীজির নিকট ব্যাকুল আবেদন জানান; ব্রিটিশের বিপন্ন অবস্থায় তাহার বিপদের সুযোগ গ্রহণ করিয়া কিছু করিতে গান্ধীজি রাজী হইলেন না। দুইবৎসর পরে ১৯৪২ সালে গান্ধীজি “ভারতত্যাগ কর” আন্দোলন শুরু করিলেন।

 আপোষহীন সংগ্রাম চালাইয়া যাইবার দুর্জয় সংকল্প লইয়া ১৯৩৯ সালে সুভাষচন্দ্র ফরোয়ার্ড ব্লক গঠন করিলেন। স্বাধীনতার সংগ্রামকে প্রবলতর করিবার উদ্দেশ্য লইয়াই এই বৈপ্লবিক দল গঠিত হয়। এই ব্লক কংগ্রেসেরই অভ্যন্তরস্থ একটি দল হিসাবে সংগঠিত হয়। কংগ্রেস ও ব্লকের পার্থক্য প্রধানতঃ দৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মপন্থার পার্থক্য। কংগ্রেসের গান্ধীপন্থীদল আপোষ আলোচনাসহায়ে স্বরাজ লাভে প্রয়াসী। সুভাষচন্দ্রের লক্ষ্য পূর্ণ স্বাধীনতা—এইজন্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে কোন প্রকার আপোষ করিতে তিনি চাহেন না। ফরোয়ার্ড ব্লকের বৈপ্লবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য অনেকে মনে করে ব্লক সহিংস পদ্ধতি গ্রহণ করিতে চায়। কিন্তু এই ধারণা সর্বৈব ভ্রান্ত। সুভাষচন্দ্র বগুড়া জেলা রাজনৈতিক সম্মেলনে