সাধনার ফলে ইহা সম্ভব হইয়াছে। কংগ্রেসের নেতৃবর্গও স্বীকার করিয়াছেন—“ষাট্ বৎসরে কংগ্রেস যাহা করিতে পারে নাই, অস্থায়ী আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্ট দুই বৎসরেই তাহা সম্ভব করিয়া তুলিয়াছে।” ভারতের বুকের উপর দিয়া বিরাট গণ-আন্দোলনের যে স্রোত বহিয়া যাইতেছে, তাহা যে আজাদ-হিন্দ-ফৌজের বিপুল প্রভাব ও প্রেরণার সাক্ষাৎ সৃষ্টি—তাহা কে অস্বীকার করিবে? শৃঙ্খলিত, নির্যাতিত ও নিরস্ত্র ভারতবাসীর হৃদয়ে এই অভূতপূর্ব্ব উদ্দীপনা ও আত্মবিশ্বাস কোথা হইতে আসিল? আজাদ-হিন্দু-ফৌজের সাধনার ফলে ভারতবাসী আত্মশক্তির উৎসের সন্ধান পাইয়াছে—তাই আজ পূর্ণজাগরণ-প্রসূত দুর্জয় সঙ্কল্প ও সংগঠনশক্তি লইয়া ভারতবাসী ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসনের উৎসাদনে শেষ ও চূড়ান্ত আঘাত হানিতে প্রস্তুত।
দেশবাসী একদিকে যেমন আজাদ-হিন্দ-ফৌজ ও অস্থায়ী জাতীয় সরকারের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন ও আন্তরিক শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করিয়াছে, অপরদিকে তেমনি ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্ট ও বহু স্বার্থান্বেষী ও ব্রিটিশ-সাম্রাজ্যবাদের প্রসাদপুষ্ট রাজনৈতিক দল নানা ভ্রান্ত ধারণা প্রচার করিয়া আমাদিগকে নানা বিষয়ে সন্দেহাকুল করিয়াছে। তাই আজ প্রশ্ন উঠিয়াছে—“আজাদ-হিন্দ-ফৌজ কি জাপানীদের হাতে ক্রীড়নকমাত্র ছিল? আজাদ-হিন্দ গভর্ণমেণ্ট কি কংগ্রেসের আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিল না? বিদেশীদের সাহায্যে কি স্বদেশের স্বাধীনতা অর্জ্জন সম্ভব? আজাদ-হিন্দ গভর্ণমেণ্ট সম্পর্কে এই সকল প্রশ্নের আলোচনা না হইলে উক্ত গভর্ণমেণ্টের প্রকৃত স্বরূপ ধারণা করা যাইবে না।
পূর্ব্ব এশিয়ায় আজাদ-হিন্দ-গভর্ণমেণ্ট ও ফৌজের গঠনই একক ঘটনা নহে। কেবল আজাদ-হিন্দ আন্দোলন নহে, অনুরূপ স্বাধীনতার আন্দোলন পূর্ব্বএশিয়ার জাপ-অধিকৃত প্রত্যেকটি দেশেই হইয়াছে। ইহার কারণ কী? পূর্ব্ব এশিয়ার সমস্ত নর-নারী কি ফ্যাসিষ্ট শাসন বরণ করিবার