পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২৫৭

যুদ্ধ চালাইবার মত সৈন্যবল ও সমরসম্ভার তাহাদের ছিল না। কাজেই, তাহাদের রণকৌশলের মূলনীতি ছিল—অতর্কিত তড়িৎ আক্রমণ, শত্রুদলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা ও উপযুক্ত রণসম্ভার লইয়া আসার পূর্ব্বেই শত্রুর প্রধান ঘাঁটিগুলি দখল করা। এই উদ্দেশ্যেই জাপান বিনাঘোষণায় অতর্কিতে যুদ্ধ শুরু করে—একই সময়ে পাঁচ-সাতটি করিয়া ঘাঁটি আক্রমণ করে—পার্লহারবারে নোঙ্গরবদ্ধ অবস্থায় মার্কিণ নৌবহর ঘায়েল করে। জাপানের এই ঝটিকা আক্রমণের নীতি বিশেষ সফল হইয়াছিল। কিন্তু ইহার সহিত সে এই ভরসাও করিয়াছিল যে, বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাহায্যদানের ফলে ঐ ঐ দেশবাসী শত্রুর পশ্চাদ্দেশে বিশৃঙ্খলতার সৃষ্টি করিবে এবং তাহাদের সাহায্যেই দেশগুলিকে মিত্রপক্ষের সেনাদলের আক্রমণ হইতে রক্ষা করিবে; কেননা, এই অধিকৃত বিরাট অঞ্চলে যুদ্ধ করিবার মত বিপুল সমরায়োজন তাহাদের ছিল না।

 অপরদিকে এই সকল দেশের দেশপ্রেমিকগণ জাপানের সাহায্য গ্রহণ করিতে স্বীকৃত হয় প্রধানতঃ তিনটি কারণে—(ক) বিদেশী সাম্রাজ্যবাদের অত্যাচার ও দাম্ভিকতায় তাহাদের বিতৃষ্ণার সীমা ছিল না। সুতরাং বিদেশী শাসনের কবল হইতে মুক্ত হইবার এই সুযোগ তাহারা ছাড়িতে চাহে নাই। (খ) জাপানের যুদ্ধে জয়লাভ সে সময়ে একরূপ নিশ্চিতই ছিল। কাজেই জাপান যতটুকু সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়াছে তাহা অগ্রাহ্য করা নির্ব্বুদ্ধিতার কাজ হইত। (গ) এই সকল দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃবর্গ জানিত তাহাদের দেশের শাসনকার্য্য চালাইবার জন্য জাপানকে তাহাদের উপরেই নির্ভর করিতে হইবে। সুতরাং একবার হাতে অস্ত্রশস্ত্র আসিবার পর জাপানীদের বিতাড়িত করাও খুব কষ্টসাধ্য হইবে না। এই অবস্থার মধ্যেই জাভায় ডাঃ সোয়েকার্ণোর গভর্ণমেণ্ট গঠিত হয়—ব্রহ্মদেশের বা ম’ ও আউঙ্গ সানের নেতৃত্বে স্বাধীন