পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২৬৩

 এই ঘটনার পরে জাতীয় বাহিনীর কমাণ্ডিং অফিসার মোহন সিং গ্রেফতার হন। মোহন সিং সম্পূর্ণ জাপ-বিরোধী ছিলেন। তিনি আজাদ হিন্দ্ ফৌজকে কোন ক্রমেই জাপানের তাঁবেদার বাহিনীতে পরিণত হইতে দেন নাই।

 অতঃপর, ১৯৪৩ সালের ৪ঠা জুলাই সুভাষচন্দ্র সিঙ্গাপুরে ভারতীয় স্বাধীনতা লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে ১৯৪৩ সালের ২১ শে অক্টোবর নেতাজী সুভাষচন্দ্র স্বাধীন ভারতের অস্থায়ী গভর্ণমেণ্ট বা আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠা করেন। ভারতের প্রতি আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করিয়া তিনি প্রসঙ্গক্রমে বলেন—“জাতীয় বাহিনীর গঠন পূর্ব এশিয়ার স্বাধীনতার আন্দোলনকে একটা বাস্তবরূপ দান করিয়াছে—ইহাতে আমাদের আন্দোলন অভূতপূর্ব গুরুত্বলাভ করিয়াছে—এই ফৌজ গঠিত না হইলে পূর্ব-এশিয়ায় এই স্বাধীনতা লীগ কেবল একটি প্রচারকার্য্যমূলক প্রতিষ্ঠান হইয়াই থাকিত। জাতীয় বাহিনী গঠনের দ্বারাই অস্থায়ী আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্ট স্থাপন সম্ভব হইয়াছে। এই গভর্ণমেণ্ট ভারতের স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত সংগ্রাম আরম্ভ ও পরিচালনা করিবে।”

 সুভাষচন্দ্র আজাদ হিন্দ্ বাহিনীর নেতৃত্ব গ্রহণ করিয়া সুস্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেন—“আজাদ হিন্দ্ ফৌজই ভারতের একমাত্র প্রতিনিধিত্বমূলক জাতীয় বাহিনী। জাপানীদের সহিত এই বাহিনীর কোন সংশ্রব নাই। ইহার নীতি, কার্য্যকলাপ ও নেতৃত্ব ভারতীয় দেশপ্রেমিক নেতাদের দ্বারা পরিচালিত হইবে। জাপানীদের ভারতবর্ষ আক্রমণ করিবার কোন অধিকার নাই। কোনরূপ বৈদেশিক কর্ত্তৃত্ব এমন কি একজন বিদেশী সৈন্যকেও ভারতবর্ষ স্বীকার করিবে না। জাপানীরা যদি বলে যে, তাহারা ব্রিটিশের কবল হইতে মুক্ত করিয়া ভারতবর্ষকে স্বাধীনতা দান করিতেছে, তথাপি আজাদ হিন্দ্ ফৌজ তাহাদিগকে অন্যায় আক্রমণ বলিয়াই গণ্য করিবে। একমাত্র ভারতের নিজস্ব বাহিনীই ব্রিটিশের কবল হইতে