পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৪
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

ভারতবর্ষকে মুক্ত করিতে পারে। জাপানীদের সামরিক কৌশলও নীতিদ্বারা এই ভারতীয় বাহিনী কখনই চালিত হইতে পারে না। জাপানীদের নীতির সহিত ইহার কোনওরূপ সংশ্রব থাকিলে ইহা পঞ্চমবাহিনী বলিয়াই ইতিহাসে নিন্দিত হইবে।”

 ১৯৪২ সালের ২৬শে এপ্রিল সুভাষচন্দ্র বার্লিন হইতে বেতার বক্তৃতায় বলেন, “ত্রিশক্তির পক্ষে ওকালতি করা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমার কর্ত্তব্য ভারতবর্ষ সম্পর্কে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ধ্বংস হইলে ভারতবর্ষ স্বাধীন হইতে পারিবে। পক্ষান্তরে কোনওক্রমে যদি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ এই যুদ্ধে টিকিয়া যায় ভারতবাসীর দাসত্বের মেয়াদ তাহা হইলে সুদীর্ঘ কালের জন্য বৃদ্ধি পাইবে। স্বাধীনতা ও দাসত্ব এই দুইটির মধ্যে একটিকে বাছিয়া লইতে হইবে। বৃটেনের ভাড়াটিয়া প্রচারকগণ আমাকে শত্রুর চর বলিয়া অভিহিত করিতেছে, ভারতবাসীর নিকট নূতন করিয়া আত্মপরিচয় দেওয়ার কোন প্রয়োজন নাই। আমার গোটা জীবনের ইতিহাসই আমার উদ্দেশ্যের সততার সাক্ষ্য দিবে। আমার সমগ্র জীবনই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে নিরবিচ্ছিন্ন এবং আপোষহীন সংগ্রামের সুদীর্ঘ ইতিহাস। চিরকাল আমি ভারতবর্ষের সেবক থাকিব। আমার মৃত্যুর শেষ মুহূর্ত্ত পর্য্যন্ত আমি ভারতবর্ষের সেবকই থাকিব। পৃথিবীর যে অংশেই আমি বাস করি না কেন একমাত্র ভারতবর্ষের প্রতিই আমার আনুগত্য ও অনুরাগ আছে এবং চিরকাল থাকিবে।”

 ১৯৪৩ সালের ২০শে জুন সুভাষচন্দ্র সাবমেরিণ যোগে টোকিও পৌঁছেন। ২৯শে জুন পূর্ব এশিয়ার প্রবাসী ভারতীয়দের প্রতি তিনি যে আবেদন প্রচার করেন তাহাতে প্রথমেই তিনি বলেন—“ভারতবর্ষকে মুক্ত করিবার দায়িত্ব আমাদেরই—আর কাহারও নহে। আমরা এই দায়িত্ব অপর কাহারও উপর চাপাইতে চাহি না। কারণ এইরূপ করিলে তাহা জাতীয় মর্য্যাদার অবমাননাকর হইবে।” আজাদ হিন্দ্ গভর্ণমেণ্টের কর্ণধাররূপে