পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৯৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

প্রেরণা জাগাইয়াছেন—তাহাদের বীর্য্য ও স্বাদেশিকতা উদ্রিক্ত করিয়াছেন। তাঁহার দুর্জ্জয় সাহস, অদম্য সঙ্কল্প ও মহনীয় আদর্শে অনুপ্রাণিত হইয়া স্বাধীনতার সৈনিকেরা মৃত্যুভয় তুচ্ছ করিয়া স্বাধীনতার লক্ষ্যপথে দুর্দ্দাম বেগে ছুটিয়াছে।

 নেতাজীর বজ্রকঠোর ও কুসুম-কোমল ব্যক্তিত্ব শত্রু-মিত্র সকলকে আকৃষ্ট করিয়াছিল। তাঁহার চরিত্রবত্তা ও আদর্শপ্রীতি, আত্মত্যাগ ও অপরিমেয় কর্মশক্তি সকলের হৃদয় হরণ করিয়া লইয়াছিল। এই তেজস্বী ও শক্তিধর পুরুষের কঠোর অনমণীয় পাষাণ-কঠিন ব্যক্তিত্বের আঘাতে শত্রুর প্রতিকূলতা ও বিপক্ষের বিরোধিতা চূর্ণ-বিচূর্ণ হইয়া যাইত; অপরদিকে তাঁহার অতুলনীয় হৃদয়মাধুর্য্য তাঁহার চরিত্রের স্নেহ-স্নিগ্ধ কমনীয়তা প্রচণ্ডতম শত্রুকেও বশে আনিত। নেতাজীর ব্যক্তিত্বের এই চৌম্বকশক্তিই সাম্প্রদায়িকতা, ক্ষুদ্র স্বার্থ ও সংস্কারের ঊর্দ্ধে লক্ষ লক্ষ নর-নারীকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল ও একজাতীয়তার সাধনমন্ত্রে সঞ্জীবিত করিয়াছিল। তাঁহার “দিল্লী চলো” ও “জয় হিন্দ্” ধ্বনি এই অসাধ্য সাধন করিয়াছে।

রক্তদানের আহ্বান—

 আজাদ হিন্দের অভিযান শেষ হইয়া যায় নাই। নেতাজী সুভাষচন্দ্রের স্বপ্ন আজিও সফল হয় নাই। স্বাধীনতা সংগ্রাম চালাইয়া যাইবার ভার নেতাজী আমাদের উপর ন্যস্ত করিয়া গিয়াছেন। মাতৃমুক্তির দায়িত্ব পালনে সন্তান কি কখনও পরাঙ্মুখ হইবে? “দেখিও, তোমাদের হাতে ভারতবর্ষের জাতীয় মর্য্যাদা যেন ক্ষুণ্ণ না হয়।” “স্বাধীনতার জন্য শেষ রক্তবিন্দু দিও।”—নেতাজীর এই আদেশ শিরোধার্য্য করিয়া স্বদেশমন্ত্রে আজ আবার নূতন করিয়া দীক্ষা লইতে হইবে। নেতাজীর বাণী সর্বদা মনোমধ্যে জাগ্রত রাখিতে হইবে—“ভুলিও না মানুষের পক্ষে সকলের চেয়ে বড়