পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৭

যদি জগতের ব্যবহারে আমার attitude পরিবর্ত্তন হয় অর্থাৎ দুঃখ নৈরাশ্য প্রভৃতি আসে, তাহা হইলে বুঝিব যে সে আমার দুর্ব্বলতা। কিন্তু আকাশের দিকে যার লক্ষ্য, সম্মুখে পর্ব্বত আসছে, কি কূপ আসছে তার সে জ্ঞান থাকে না——সেইরকম যার একমাত্র লক্ষ্য mission এর দিকে, আদর্শের দিকে, তার ওসব দিকে মোটেই ভ্রূক্ষেপ নাই।”

 আই, এ পাশ করিবার পর সুভাষচন্দ্র প্রেসিডেন্সী কলেজেই দর্শনশাস্ত্রে অনার্স লইয়া বি, এ, পড়িতে থাকেন এবং নিজের চরিত্রবলে স্বল্পকালের মধ্যে ছাত্রগণের নেতৃস্থানীয় হইয়া উঠেন। এই সময় প্রেসিডেন্সী কলেজে ইংরেজী সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন মিঃ ওটেন। উগ্র সাম্রাজ্যবাদ পুষ্ট সংস্কৃতির উদ্ধত প্রতিনিধি বলিতে যা বুঝায় তিনি ছিলেন ঠিক তাই। ভারতবাসীর প্রতি চরম অবজ্ঞাই ছিল তাঁহার প্রধান আনন্দ —তাঁহার ঔদ্ধত্যও ছিল অপরিসীম। ১৯১৬ খৃষ্টাব্দে ইংরেজী সাহিত্যের অধ্যাপক মিঃ ওটেনের দুর্ব্ব্যবহারে কলেজের ছাত্রদের মধ্যে গোলযোগ উপস্থিত হয় ও ছাত্রের ধর্ম্মঘট করে! সুভাষচন্দ্র ধর্ম্মঘটকারীদের নেতৃত্ব করেন। এই ঘটনার ঠিক একমাস পরে মিঃ ওটেন পুনরায় ছাত্রদের প্রতি দুর্ব্ব্যবহার করিলে ছাত্রেরা মিঃ ওটেনকে প্রহার করিয়া ইহার প্রতিশোধ গ্রহণ করে। অধ্যাপককে প্রহারের অপরাধে কলেজের কর্ত্তৃপক্ষ সুভাষচন্দ্র ও কতিপয় ছাত্রকে অনির্দ্দিষ্ট কালের জন্য ‘রাসটিকেট’ করেন। সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হইয়াই ছাত্ররা ওটেনের দুর্ব্ব্যবহারের প্রতিশোধ লয়। কিন্তু ওটেনকে মারপিটের সময় প্রকৃতপক্ষে সুভাষচন্দ্র সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি এই ব্যাপারে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত না থাকায় কলেজের অধ্যক্ষ জেমস সাহেব তাঁহাকে তাঁহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করিয়া শাস্তি হইতে অব্যাহতি লাভ করিবার পরামর্শ দেন। এমন কি বিচারে তাঁহাকে সন্দেহের অবকাশে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব করা হইয়াছিল। কিন্তু দায়িত্ব অস্বীকার