পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
৩১১

ফুজিয়ারার উদ্দেশ্য ছিল জাপানের তাঁবেদার হিসাবে একটি ভারতীয় সমিতি খাড়া করা। কিন্তু যে ভারতীয়গণ সুদীর্ঘ বৎসর বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের শাসনযন্ত্রের তলায় নিষ্পেষিত হইয়া আসিতেছিলেন, তাঁহারা পরাধীনতার জ্বালা মর্মে মর্মে বুঝিয়াছিলেন। তাঁহারা ফুজিয়ারার এই আবেদনে সাড়া দিতে পারেন নাই। তাঁহারা বুঝিয়াছিলেন—ভারতের স্বাধীনতা ভারতের ভিতরে এবং বাহিরে ভারতীয়গণ কর্ত্তৃকই অর্জন করিতে হইবে। তাঁহারা বুঝিয়াছিলেন, ভারতীয় স্বাধীন বাহিনীরই মুক্তিদাতা বাহিনী হিসাবে ভারত প্রবেশের অধিকার আছে; কোন বৈদেশিক শক্তির বা বাহিনীর সে অধিকার নাই। এই দূরদৃষ্টি অনুযায়ী তাঁহারা ফুজিয়ারাকে কোনরূপে এড়াইবার জন্য বলেন যে, এ বিষয়ে তাঁহারা আরো গভীরভাবে চিন্তা করিবেন এবং প্রয়োজন হইলে পুনর্বার তাঁহার (ফুজিয়ারার) সহিত সাক্ষাৎ করিবেন।

 ইহার পর ৯ই এবং ১০ই মার্চ ১৯৪২ সালে মালয়ের বিভিন্ন স্থান হইতে আগত ভারতীয় নেতৃবৃন্দ সিঙ্গাপুরে একটি সভা করেন। (ইতিমধ্যে রাসবিহারী বসু মালয়ে শ্যামের একটি প্রতিনিধি সম্মেলন আহ্বান করেন) সিঙ্গাপুরের সভায় স্থির হয় যে টোকিওতে একটি শুভেচ্ছা দল পাঠান হউক। এই প্রস্তাব জাপানীদের ঘোষিত ইচ্ছার বিরুদ্ধেই করা হইয়াছিল, কারণ তাহারা চাহিয়াছিল একটি ‘অফিসিয়্যাল ডেলিগেশন’ পাঠাইতে। তাহা হইলে সেই ডেলিগেশন জাপানীদের মুখপাত্র হিসাবেই গণ্য হইত। কিন্তু ভারতীয় নেতৃবৃন্দ কোনরূপেই জাপানী তাঁবেদার হিসাবে গণ্য হইতে অস্বীকার করেন।

 ইহার পর ১৯৪২ সালের ২৮শে,২৯শে এবং ৩০শে মার্চ শ্রীরাসবিহারীর সভাপতিত্বে টোকিওতে একটি সম্মেলন বসে। এই সম্মেলনে উপরিউক্ত শুভেচ্ছা দলের প্রতিনিধিবৃন্দ ছাড়াও হংকং, সাংহাই ও জাপান প্রবাসী ভারতীয় প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এই সম্মেলনে প্রস্তাব গৃহীত