পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
৩১৩

অনুসৃত হইবে। ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্ব মানিয়া চলিতে হইবে। কংগ্রেসের আন্দোলনের সহিত যোগসূত্র সাধন করিতে হইবে।

 ৩। পূর্ব এশিয়ার ভারতীয় বাহিনী হইতে এবং ভারতীয় বেসামরিক জনসাধারণের মধ্য হইতে সৈন্য সংগ্রহ করিয়া একটি আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করিতে হইবে।

 ৪। ভারতবর্ষের প্রতি এবং এই নবগঠিত আজাদ হিন্দ সঙ্ঘের প্রতি জাপানীদের নীতি কি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করার জন্য জাপানী কর্ত্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানাইতে হইবে।

  এইরূপে ব্যাংকক সম্মেলন হইতে গণতান্ত্রিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে আজাদ হিন্দ সঙ্ঘ গঠিত হইল। ইহার সভাপতি হইলেন শ্রীরাসবিহারী বসু। সিঙ্গাপুর উক্ত সঙ্ঘের প্রধান কর্ম্মস্থল হইল। একটি কেন্দ্রীয় পরিষদ গঠিত হইল এবং পূর্ব এশিয়ার প্রত্যেক দেশে ইহার শাখা সঙ্ঘ স্থাপিত হইল। এই সময় গান্ধীজীর নেতৃত্বে কংগ্রেস ১৯৪২ সালের ৮ই আগষ্ট ‘ভারত ত্যাগ কর’ প্রস্তাব গ্রহণ করিলেন। সমগ্র ভারতবর্ষ দুইটি মন্ত্রে দীক্ষিত হইল—করেঙ্গে ঔর মরেঙ্গে। ভারতব্যাপী দাবানল জ্বলিয়া উঠিল। ভারতবর্ষের সমস্ত কংগ্রেস নেতাকে তড়িৎ আক্রমণ হানিয়া বৃটিশ শক্তি কারারুদ্ধ করিল; সহস্র সহস্র কংগ্রেসকর্মী, জনগণ বৃটিশের গুলীতে প্রাণ বিসর্জন দিতে লাগিলেন, বৃটিশ বিমান হইতে বোম বর্ষণের ফলে গ্রাম, নগর ধ্বংস হইতে লাগিল। এই সকল সংবাদে পূর্ব এশিয়ার সর্বত্র অভূতপূর্ব চাঞ্চল্য এবং অদম্য কর্মোৎসাহ চূড়ান্ত সীমায় ঠেলিয়া উঠিল। এই চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতিতে এইবার সর্বপ্রথম ক্যাপ্টেন মোহন সিংয়ের অধিনায়কত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজের গঠনকার্য আরম্ভ হইল। মালয়ে যে সকল ভারতীয় সৈন্য আত্মসমর্পন করিয়াছিল, তাহাদের লইয়াই বাহিনী গঠনের প্রাথমিক কর্মসূচী অনুসৃত হইতে