পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩১৪
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

লাগিল। মালয় প্রবাসী ভারতীয়গণের নিকট আবেদন জানাইলে আশাতিরিক্ত সাড়া পাওয়া যাইতে লাগিল।

 এই সকল ঘটনা প্রত্যক্ষ করিয়া জাপান ভড়কাইয়া গেল। ভারতীয়গণের এই স্বাধীন প্রচেষ্টা জাপান কিছুতেই প্রীতির চক্ষে দেখিতে পারে নাই। বরঞ্চ সাম্রাজ্যবাদী জাপানের মনেও ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি হইয়াছিল। সুতরাং জাপানী কতৃপক্ষের সহিত আজাদ হিন্দ ফৌজের কর্মপরিষদের সঙ্গে সঙ্ঘর্ষ বাঁধিয়া উঠিল। প্রধানতঃ দুইটি কারণে তিক্ততা চরম হইয়া পড়িল, যেমন—

 ১। কর্মপরিষদ দাবী জানাইয়াছিলেন, ভারতবর্ষ, পূর্ব এশিয়া এবং আজাদ হিন্দ সঙ্ঘের প্রতি জাপানের নীতি কি ইহা জাপান অনতিবিলম্বে ঘােষণা করুক। জাপান উত্তরে জানাইয়াছিল, কতকগুলি মামুলী জবাব। যেমন ভারতকে সাহায্য করিতে জাপান প্রস্তুত, ভারতে রাজ্য বা অধিকার বিস্তারের কোন দুরভিসন্ধি জাপানের নাই, ইত্যাদি। কিন্তু কর্মপরিষদ জাপানী গবর্ণমেণ্টের ঐ মামুলী জবাব সন্তোষজনক বলিয়া গণ্য করিতে পারেন নাই।

 ২। সম্পূর্ণভাবে জাপানিগণ কর্তৃক পরিচালিত ইয়াকুবরা কিকান নামক ‘লায়াসন’ ডিপার্টমেণ্টের অফিসারগণ আজাদ হিন্দ ফৌজের কার্যকলাপে হস্তক্ষেপ করিতে আসিতেন। সুতরাং ১৯৪২ সালের ডিসেম্বর মাসেই চরম সঙ্কট ঘনাইয়া উঠিল। মালয়ে গঠিত আজাদ হিন্দ ফৌজকে জাপানী সমরকর্তাদের আদেশ অনুসারে বার্মায় স্থানান্তরিত করিতে কর্মপরিষদ অস্বীকার করিল। জাপানীদের অন্যান্য অনেক দাবীও সরাসরি অগ্রাহ্য় করা হইল। কর্মপরিষদকে না জানাইয়া জাপানীরা ৮ই ডিসেম্বর আজাদ হিন্দ ফৌজের কর্ণেল এন এস গিলকে গ্রেপ্তার করিলে অবস্থা চরমে গিয়া পৌঁছে। ইহার প্রতিবাদে পরিষদের সভ্যগণ পদত্যাগ করেন, ইহাতে শ্রীরাসবিহারী অবস্থার গুরুত্ব বুঝিতে পারেন এবং জানান