পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩১৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

কার্যকলাপ প্রভৃতি ব্যাপকতা লাভ করায় একটি গবর্নমেণ্ট স্থাপনের প্রয়ােজনীয়তা অনুভূত হইল।

 সুতরাং শ্রীসুভাষচন্দ্র একটি অস্থায়ী গবর্নমেণ্ট গঠন করিলেন। ইহার নাম হইল স্বাধীন-ভারত-অস্থায়ী গবর্ণমেণ্ট। তাঁহাকেই রাষ্ট্রের সর্বপ্রধান অধিনায়ক করা হইল। ইহা ইংলণ্ডের বিরুদ্ধে যুধ্যমান সকল রাষ্ট্র কতৃক গবর্ণমেণ্ট হিসাবে স্বীকৃত হইল। ঐ বৎসর ২৩শে অক্টোবর স্বাধীন-ভারত-অস্থায়ী গবর্নমেণ্ট যথাযথ নিয়ম ও রীতি অনুযায়ী ইংলণ্ড ও আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধঘােষণা করিল। আজাদ হিন্দ্ সঙ্ঘ ও স্বাধীন-ভারত-অস্থায়ী গবর্নমেণ্টের প্রধান কর্মস্থল ভারতের নিকটবর্তী কোন স্থানে হওয়া আবশ্যক বিবেচনায় ১৯৪৪ সালের ৭ই জানুয়ারী উহার কর্মস্থল বার্মায় স্থানান্তরিত হয়। বার্মায় স্থানান্তরিত হওয়ার পর হইতে অস্থায়ী গবর্ণমেণ্টের কার্যকলাপ, আরও ব্যাপক হইয়া উঠে। স্বাধীন ভারত অস্থায়ী গবর্ণমেণ্ট যথাযথভাবে মন্ত্রী নিয়ােগ করিয়াই বিভিন্ন রাষ্ট্রিক কার্য চালাইতেন, কাহারও খুসীমত বা নীতিশূন্যভাবে কিছুই ঘটিতে পারিত না। এই সকল মন্ত্রী ছিলেন আজাদ হিন্দ সঙ্ঘের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। রেঙ্গুণই ছিল অস্থায়ী গবর্নমেণ্টের রাজধানী এবং প্রধান কর্মস্থল। এখানে ১৯টি বিভিন্ন ডিপার্টমেণ্ট ছিল। প্রত্যেকটি ডিপার্টমেণ্টেরই রীতিমতভাবে রেকর্ড-বুকস্ নথিপত্র হিসাব প্রভৃতি সংরক্ষণের ব্যবস্থা ছিল। যােগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিগণকেই এই সকল কর্মে নিয়ােগ করা হইত। ঊর্ধতন কর্মচারীর নিকট তাঁহাদের জবাবদিহি করিতে হইত। এক কথায় ইহা আইন অনুসারে নির্বাচিত গবর্ণমেণ্টের মতই ছিল। রেঙ্গুন হেডকোয়ার্টার হওয়ায় নানা দিক দিয়া অনেক সুবিধা হইয়াছিল।

 এই সঙ্ঘের রিয়ার হেডকোয়ার্টার্স ছিল সিঙ্গাপুরে। এখান হইতেই মালয়, সুমাত্রা, জাভা, বাের্ণিও প্রভৃতি অঞ্চলের তদারক করা হইত। আজাদ হিন্দ্ সঙ্ঘের কেবলমাত্র মালয়েই ৭০টি শাখা ছিল, মালয় শাখার