পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পরিশিষ্ট—(গ)

আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্টের ঘোষণা

(শোনান, ২১শে অক্টোবর, ১৯৪৩ সাল)

 ১৭৫৭ সালে বাঙ্গালা দেশে বৃটিশের হাতে প্রথম পরাজয়ের পর ভারতীয় জনগণ একশত বৎসর ধরিয়া অবিশ্রান্তভাবে প্রচণ্ড সংগ্রাম করিয়াছে। এই সময়কার ইতিহাস অতুলনীয় বীরত্ব এবং আত্মত্যাগের বহু দৃষ্টান্তে পরিপূর্ণ। ইতিহাসের পৃষ্ঠায় সিরাজদ্দৌলা, বাঙ্গলার মোহনলাল, হায়দরআলী, টিপু সুলতান দক্ষিণ ভারতের ভেলুতাম্পি, আপ্পা সাহেব ভোঁস্‌লা, মহারাষ্ট্রের পেশোয়া বাজীরাও, অযোধ্যার বেগম, পাঞ্জাবের সর্দ্দার শ্যাম সিংহ আতিরিওয়ালা, ঝাঁসির রাণী লক্ষ্মীবাঈ, তাঁতিয়া টোপি, দুমরাওনের মহারাজ কুনোয়ার সিং, নানা সাহেব আরও বহু বীরের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত রহিয়াছে। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমাদের পিতৃপুরুষগণ প্রথমে বুঝিতে পারেন নাই যে, বৃটিশ সমগ্র ভারত গ্রাস করিতে উদ্যত হইয়াছে। কাজেই তাঁহারা সম্মিলিতভাবে শত্রুর বিরুদ্ধে দণ্ডায়মান হন্ নাই। পরিশেষে যখন ভারতীয় জনগণ অবস্থার গুরুত্ব বুঝিতে পারিল তখন তাহারা সম্মিলিত হইল। ১৮৫৭ সালে বাহাদুর সাহের অধিনায়কত্বে তাহারা স্বাধীন জাতি হিসাবে শেষ সংগ্রাম করিল। যুদ্ধের প্রথমভাগে কয়েকটি জয়লাভ সত্ত্বেও দূর্ভাগ্য এবং ভ্রান্ত নেতৃত্ব ধীরে ধীরে তাহাদের চরম পরাজয় ও পরাধীনতা আনিয়া দিল। তথাপি ঝাঁসির রাণী, তাঁতিয়া টোপি, কুনোয়ার সিং এবং নানা সাহেব জাতির গগনে চিরন্তন নক্ষত্রের ন্যায় জ্যোতিষ্মান থাকিয়া আমাদিগকে আরও আত্মত্যাগ এবং সাহসিকতার প্রেরণা দিবে।

 ১৮৫৭ সালের পর বৃটিশরা সবলে ভারতীয়দের নিরস্ত্র করিয়া দেয় এবং আতঙ্ক ও পাশবিকতার রাজত্ব সৃষ্টি করে। ইহার পর কিছুদিন ভারতবাসী হতমান এবং হতবাক হইয়াছিল। ১৮৮৫ সালে কংগ্রেসের