পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

বাঙ্‌লার প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির প্রচার বিভাগের ভারও ন্যস্ত করেন। এই কার্য্যে সুভাষচন্দ্রকে অনেক বাধাবিঘ্ন ও অপ্রিয় সমালোচনার সম্মুখীন হইতে হইয়াছিল।

 প্রচার বিভাগের কর্ত্তা হিসাবে গভর্ণমেণ্টের কংগ্রেসবিরোধী প্রচারকার্য্য ব্যর্থ করিতে তিনি যে দক্ষতা ও কর্ম্মশক্তির পরিচয় দিয়াছিলেন তাহা বিদেশী আমলাতন্ত্রকেও বিস্মিত করিয়াছে। বাঙ্‌লার কংগ্রেসী কার্য্যকলাপ ও কর্ম্মনীতি সম্বন্ধে তখন যে সমস্ত সমস্যা উঠিয়াছিল, সুভাষচন্দ্র কয়েকটি বিবৃতি প্রকাশ করিয়া তাহাদের যে সমাধান করেন তাহাতে বিরুদ্ধ সমালোচকগণও নীরব হইয়া যান। সুভাষচন্দ্রের বিবৃতিসমূহ পাঠ করিয়া সরকারী মুখপত্র ‘ভারতবন্ধু’ ষ্টেটস্‌ম্যান্ মন্তব্য করিয়াছিল— “অসহযোগ আন্দোলনের আহ্বানে শ্রীযুক্ত সুভাষচন্দ্র বসু Indian Civil Service ত্যাগ করিয়াছেন। বৃটিশ আমলাতন্ত্র একজন অসাধারণ প্রতিভাবান ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎবিশিষ্ট কর্ম্মচারী হারাইলেন এবং কংগ্রেস-আমলাতন্ত্র তাঁহাকে লাভ করিলেন।··· · ···ইস্তাহারপ্রচারবিদ্যায় শ্রীযুক্ত বসু সিমলাকেও হারাইয়াছেন।” এই সময় বাঙ্‌লাদেশে “স্বেচ্ছাসেবক আন্দোলন” আরম্ভ হয়, সুভাষচন্দ্র এই আন্দোলনের নেতৃত্ব ভার গ্রহণ করেন, ইউনিভার্সিটি ট্রেণিং কোরে যোগদান করিয়া তিনি যে শিক্ষালাভ করিয়াছিলেন তাহা এখন বিশেষ কাজে লাগে। সত্য-সংগঠনের কাজে তাঁহার বিশেষ প্রতিভার প্রমাণ, বাল্যকাল হইতেই পাওয়া যায়। ভবানীপুরে “দক্ষিণ কলিকাতা সেবক সমিতি” নামে একটি জনসেবামূলক প্রতিষ্ঠান ছিল। বাল্যকালে ঐ প্রতিষ্ঠানের কর্ম্মীরূপে সুভাষচন্দ্রের দেশসেবার কার্য্যে হাতেখড়ি হয়। প্রতি রবিবারে তিনি ঐ প্রতিষ্ঠানের জন্য থ’লে কাঁধে করিয়া, বাড়ী বাড়ী মুষ্টি-ভিক্ষা আদায় করিতে যাইতেন। সেদিনের সেই সরল উদার সেবাব্রতী ভাবপ্রবণ বালকের সুকুমার চিত্তে সঙ্ঘ গড়িবার শক্তির যে ক্ষুদ্র বীজটি অঙ্কুরিত হইয়াছিল