পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২৯

গ্রেফতার হন। তথাপি সরকারের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইল না। কলিকাতা মহানগরী সাফল্যের সহিত হরতাল প্রতিপালন করিল। যেদিন যুবরাজ হাওড়া স্টেশনে আসিয়া পৌঁছেন, সেইদিন কলিকাতার দোকানপাট সমস্ত বন্ধ। বৃটিশসাম্রাজ্যের মহানগরী কলিকাতায় পদার্পণ করিয়া ইংলণ্ডের যবরাজ কৃষ্ণপতাকাদ্বারা অভ্যর্থিত হইলেন। বৃটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতবাসীর তীব্র অসন্তোষ যুবরাজ নিজেই প্রত্যক্ষ করিলেন।

 প্রায় তিনমাস হাজত বাসের পর দেশবন্ধু ও সুভাষচন্দ্র ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইলেন। প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যোগদান করিয়া সুভাষচন্দ্রের এই প্রথম কারাদণ্ড ভোগ। বিচারকের দণ্ডাদেশ শ্রবণে সুভাষচন্দ্র সকৌতুকে বলিয়াছিলেন—“মাত্র ছয় মাস! আমি কি মুরগী চুরি করিয়াছি যে এত লঘু দণ্ড হইল? (Six months only! Have I robbed a fowl?)” জেলে অবস্থান কালে সুভাষচন্দ্র দেশবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য লাভের সুযোগ পান। জেলখানায় সুভাষচন্দ্র দেশবন্ধুর রন্ধনকার্য্যে নিযুক্ত থাকিতেন। তিনি দেশবন্ধুর প্রাইভেট সেক্রেটারীর কাজও করিতেন এবং সময়ে সমযে দেশবন্ধুর শিক্ষকতা করিবার সৌভাগ্যও তাঁহার ঘটিত। ৺পৃথ্বীশচন্দ্র রায়ের Life and Times of C. k. Dass নামক গ্রন্থ হইতে জানা যায় যে কারাবাস কালে দেশবন্ধু, সুভাষচন্দ্রের নিকট নীতিশাস্ত্র ও তত্ত্ববিদ্যা অধ্যয়ন করিতেন। এই সময় সুভাষচন্দ্র দেশবন্ধুর অধিক প্রিয়পাত্র হইয়া উঠেন।