পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নয়

 সুভাষচন্দ্রের মান্দালয় জেলে অবস্থান একটি ঘটনার জন্য বিশেষ স্মরণীয়। ১৯২৬ সালের ২০শে ফেব্রুয়ারি সুভাষচন্দ্র ও অপর কয়েকজন রাজবন্দী অনশন ধর্ম্মঘট করেন। দুর্গাপূজা, সরস্বতীপূজা ও অন্যান্য ধর্ম্মোৎসবের জন্য রাজবন্দীদিগকে কোনরূপ ভাতা দেওয়া হইত না। সেই বৎসর ২৫শে অক্টোবর দুর্গাপূজা। মান্দালয় জেলের রাজবন্দীরাও বাঙ্গালীর এই উৎসব উপলক্ষে অর্থসাহায্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য সরকারের নিকট আবেদন করেন। জেল সুপারিন্‌টেন্‌ডেণ্ট মেজর ফিল্‌লে রাজবন্দীদের দাবী পূরণ করিতে স্বীকৃত হইলেও সরকার তাঁহাদের প্রস্তাবে অসম্মত হন। সরকারের এই অনমনীয় মনোভাবের প্রতিবাদ কল্পে রাজবন্দীরা অনশন ধর্ম্মঘট করে। রেঙ্গুনের নাগরিকগণ জনসভা করিয়া অনশন ধর্ম্মঘটকারীদের প্রতি সহানুভূতি জ্ঞাপন করেন। ২৪শে ফ্রেব্রুয়ারী তারিখের কলিকাতা কর্পোরেশনের এক সভায় গভর্ণমেণ্টের কার্য্যের নিন্দা করিয়া এক প্রস্তাব গৃহীত হয়। ২৫শে কেব্রুয়ারী এই সম্পর্কে বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভায় একটি মুলতবী প্রস্তাব আনয়ন করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রেসিডেণ্ট উক্ত প্রস্তাব উত্থাপনের অনুমতি প্রদান করেন না। অনশনকারী রাজবন্দীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে ২৮শে ফ্রেব্রুয়ারী কলিকাতা সহরে পূর্ণ হরতাল প্রতিপালিত হয়। এইরূপে দিকে দিকে যখন বিক্ষোভের অগ্নিশিখা জ্বলিয়া উঠিল তখন সরকার বাধ্য হইয়া বন্দীদের সমস্ত দাবী পূরণ করিতে স্বীকৃত হইলেন। সুভাষচন্দ্রের জীবনে এই প্রথম অনশন ধর্ম্মঘট। অনশন ধর্ম্মঘটের ফলে উদ্বুদ্ধ অন্তর্নিহিত আত্মশক্তির উপলব্ধিও সুভাষচন্দ্রের জীবনে এই প্রথম। দক্ষিণ কলকাতা সেবক সমিতির সহ-সম্পাদক শ্রীযুক্ত অনিলচন্দ্র বিশ্বাসকে লিখিত একখানি পত্রে তিনি লিখেন