পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
৫৫

live wholly from within”—একথা অক্ষরে অক্ষরে সত্য এবং এই সত্যের উপর আমার বিশ্বাস দিন দিন দৃঢ়তর হইতেছে।”

 সুভাষচন্দ্রের মান্দালয় বাসকালে বাংলাদেশকে অন্ধকার করিয়া ১৯২৫ সালের ১৬ই জুন বাঙ্‌লার গৌরব-রবি দেশবন্ধু অস্তমিত হন। এই উপলক্ষে সাহিত্যাচার্য্য শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সহিত সুভাষচন্দ্রের যে পত্র বিনিময় হয়, তাহা হইতে দেশবন্ধুর প্রতি সুভাষচন্দ্রের ঐকান্তিক শ্রদ্ধা ও ভক্তির পরিচয় পাই। “দেশবন্ধু করিতেন দেশের কাজ, আমরা করিতাম দেশবন্ধুর কাজ। দ্বিধাবিহীন চিত্তে কায়মনোবাক্যে তাঁহার আদেশ পালন করিয়া যাওয়াই ছিল আমাদের একমাত্র কাজ।” দেশবন্ধুর মৃত্যুতে সাহিত্যচার্য্য শরৎচন্দ্র মাসিক বসুমতীতে ‘স্মৃতিকথা’ লিখেন। শরৎচন্দ্রের স্মৃতি কথা পড়িয়া সুভাষচন্দ্র তাঁহাকে লিখেন, “যাঁহারা তাঁর অন্তরঙ্গ ছিল তাঁদের মনের মধ্যে কতগুলি গোপন ব্যথা রয়ে গেল। আপনি সে গোপন ব্যাথার কয়েকটির উল্লেখ করে শুধু যে সত্য প্রকাশ করবার সহায়তা করেছেন তা নয়, আপনি আমাদের মনের বোঝাটাও হালকা করেছেন। বাস্তবিক “পরাধীন দেশের সবচেয়ে বড় অভিশাপ এই যে মুক্তি সংগ্রামে বিদেশীয়দের অপেক্ষা দেশের লোকদের সঙ্গেই মানুষকে লড়াই করিতে হয় বেশী।” এই উক্তির নিষ্ঠুর সত্যতা তাঁর অনুগামী কর্ম্মীরা হাড়ে হাড়ে বুঝেছে এবং এখনও বুঝছে।” আপনি এক জায়গা লিছেন —“লোক নাই, অর্থ নাই, হাতে একখানা কাগজ নাই, অতি ছোট যাহারা তাহারা ও গালি গালাজ না করিয়া কথা কহে না। দেশবন্ধুর সে কি অবস্থা!” সেদিনকার কথা এখনও আমার মনে স্পষ্ট অঙ্কিত আছে। আমরা যখন গয়া কংগ্রেসের পর কলিকাতায় ফিরি তখন নানাপ্রকার অসত্যে এবং অর্দ্ধসত্যে বাঙ্‌লার সংবাদপত্রগুলি ভরপুর। আমাদের স্বপক্ষে ত কথা বলেই নাই, এমন কি আমাদের বক্তব্যও তাদের কাগজে স্থান দিতে চায় নাই। তখন স্বরাজ্য-ভাণ্ডার প্রায় নিঃশেষ। যখন