পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
৬১

সম্বন্ধীয় এক প্রবন্ধের একস্থানে লিখিয়াছেন, ‘হিটলারকে কারাগারে বন্দী করিয়া রাখাই এক মারাত্মক ভুল হইযাছে, কারণ এই কারাগৃহেই তিনি জার্মেনীর জন্য লেবেনসরম (Lebensaraum) বা পর্য্যাপ্তবাসভূমি দাবী করার বিষয় চিন্তা করেন এবং উত্তরকালে জার্মানদের উপযুক্ত বাসস্থানের জন্যই হিট্‌লার সমগ্র বিশ্বকে জার্মেনীর করতলগত করিতে চাহিয়াছিলেন।’ নাৎসীনায়ক হিটলারের সহিত সুভাষচন্দ্রের তুলনা না করিয়াও বলা চলে যে সুভাষচন্দ্রকে মান্দালয়ে বন্দী করিয়া কর্ত্তৃপক্ষ মহাভুলই করিয়াছিলেন। কেননা এই মান্দালয় কারাগৃহে বসিয়াই তিনি দেশের যুবক, শ্রমিক ও কৃষক আন্দোলনের কথা ভাবিতে আরম্ভ করেন এবং কংগ্রেসের অভ্যন্তরে যুবক শ্রমিক ও কৃষকদের সংঘবদ্ধ করিয়া একটি সংগ্রামশীল ‘বামপক্ষ’ গঠনের সঙ্কল্প করেন। মান্দালয় জেলে উদ্ভাবিত এই কর্মপন্থাই তিনি মহারাষ্ট্র প্রাদেশিক রাষ্টীয় সম্মেলনে দেশবাসীর নিকট ঘোষণা করেন।

 এদিকে সর্দ্দার প্যাটেলের নেতৃত্বে বার্দ্দোলির কিষাণেরা খাজানা দিতে অস্বীকার করিয়া এক আন্দোলন শুরু করে। সুভাষচন্দ্রের ইচ্ছা ছিল এই সুযোগে দেশব্যাপী গণ-আন্দোলনের সৃষ্টি করা। কিন্তু কংগ্রেসের প্রবীন নেতারা তখনও প্রত্যক্ষ সংগ্রামের পথে পা বাড়াইতে নারাজ। কলিকাতায় নিখিল ভারত যুব-সঙ্ঘের অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি হিসাবে তিনি সর্ব্বপ্রথম গান্ধী-নীতির সমালোচনা করেন ও দেশবাসীর নিকট প্রত্যক্ষ সংগ্রামের আদর্শ প্রচার করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলিয়াছিলেন “There is absolutely no doubt that if the Congress Working Committee had taken courage in both hands, they could have anticipated the movement of 1930 by two years and the appointment of the Simon Commission could have made the starting point of such movement.”