পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
৬৩

সমর্থকেরা কিন্তু নেহেরু কমিটির সুপারিশ হইতে অধিকদূর অগ্রসর হইতে চাহিলেন না। অধিবেশন মণ্ডপে জওহরলালের সহিত মতিলালের বাগবিতণ্ডা হইয়া যায়। শেষ পর্য্যন্ত গান্ধীজী উভয়দলকে সন্তুষ্ট করিয়া এই মর্ম্মে এক প্রস্তাব আনয়ন করেন যে, বৃটিশ পার্লামেণ্ট যদি ১৯২৯ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে নেহেরু কমিটির সুপারিশ না মানিয়া লয় তবে কংগ্রেস অহিংস অসহযোগ সংগ্রাম শুরু করিবে। কিন্তু সুভাষচন্দ্রের মতে “The maximum concession which they could make fell short of the minimum demand of the left wingers.” সুভাষচন্দ্র পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী করিয়া এক সংশোধন প্রস্তাব আনয়ন করেন। তাঁর প্রস্তাবটি এই:—“কংগ্রেসের মাদ্রাজ অধিবেশনে পূর্ণ স্বাধীনতা ভারতীয় জনগণের আদর্শ বলিয়া সিদ্ধান্ত করা হইয়াছে। কংগ্রেস সেই পূর্ব্ব সিদ্ধান্তে অটল থাকিয়া এই অভিমত প্রকাশ করিতেছে যে, ব্রিটেনের সহিত সম্পূর্ণ ভাবে সম্পর্কচ্ছেদ না হওয়া পর্য্যন্ত প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ অসম্ভব।” এই প্রস্তাব উত্থাপন করিয়া তিনি বলেন, “হয়ত আপনারা বলিবেন যে স্বাধীনতার এই প্রস্তাব করিয়া আমাদের কি লাভ হইবে? হহার উত্তরে আমি বলিব, ইহা দ্বারা আমাদের এক নূতন মনোবৃত্তি গড়িয়া উঠিবে। রাজনীতিক্ষেত্রে আমাদের অধঃপতনের মূল কারণ কি? আমাদের বর্ত্তমান মনোবৃত্তিই উহার কারণ। এই হীন মনোবৃত্তির কোনরূপ পরিবর্ত্তন যদি আপনাদের কাম্য হয়, তাহা হইলে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভের আদর্শ দেশবাসীর মনে সঞ্চার করিতে হইবে। যদি ইহাও ধরিয়া লওয়া হয় যে, আমরা কার্য্যতঃ পূর্ণ স্বাধীনতার আদর্শ অনুসরণ করিব না সত্য, কিন্তু দেশবাসীর নিকট অকপট ভাবে এই আদর্শ প্রচার করিব তাহা হইলেও আমরা এক নূতন ভাবধারায় অনুপ্রাণিত তরুণ সম্প্রদায় গড়িয়া তুলিব। আমি আপনাদিগকে জানাইতেছি যে, আমরা হাত পা গুটাইয়া বসিয়া থাকিব না। দেশের তরুণেরা তাহাদের