পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
৬৫

জাতীয় সংগ্রামে মুক্তিফৌজের কাজ করে—ভারতবর্ষে তাহার ব্যতিক্রম হইতে পারে না। ইহার পরেই সুভাষচন্দ্র, জওহরলাল ও শ্রীযুক্ত শ্রীনিবাস আয়েঙ্গার প্রমুখ পূর্ণ-স্বাধীনতাবাদী নেতৃবর্গ কংগ্রেসের অভ্যন্তরে পূর্ণ স্বাধীনতার আদর্শ প্রচারের জন্য “স্বাধীনতা সঙ্ঘ” গঠন করেন।

 ১৯২৯ সালের এপ্রিল মাসে বাঙ্‌লার গভর্ণর হঠাৎ বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভা ভাঙ্গিয়া দিলেন। তাঁহার এইরূপ আচরণের দ্বারা তিনি স্বরাজ্যদলকে শক্তি পরীক্ষায় আহ্বান করিতেছেন বুঝা গেল। সুভাষচন্দ্রও অসীম সাহস ও ঐকান্তিক দৃঢ়তার সহিত এই আহ্বান গ্রহণ করিলেন।১৯২৯ সালের জুনমাসে যে নির্ব্বাচন হইল তাহাতে কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থীরাই বিপুল ভোটাধিক্যে নির্ব্বাচিত হইলেন। এই বৎসর আগষ্ট মাসে “নিখিল ভারত লাঞ্ছিত রাজনৈতিক কর্মী দিবস” পালন উপলক্ষে দক্ষিণ কলকাতায় এক শোভাযাত্রা পরিচালন করিতে গিয়া সুভাষচন্দ্র রাজদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত হন। যখন গ্রেফ্‌তারী পরওয়ানা জারী হয় সুভাষচন্দ্র তখন পাঞ্জাবে ছিলেন। পাঞ্জাব হইতে প্রত্যাবর্ত্তন করিয়া তিনি আলিপুরের ম্যাজিষ্ট্রেটের এজলাসে উপস্থিত হইলেন। মামলার বিচারসাপেক্ষ তাঁহাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। তখন হইতে কংগ্রেসের সাহোর অধিবেশন পর্য্যন্ত তিনি জামিনে মুক্ত ছিলেন।

 ১৩ই সেপ্টেম্বর লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার আসামী যতীন দাস লাহোর সেণ্টাল জেলে ৬৩ দিন অনশনের পর প্রাণত্যাগ করেন। তাঁহার মৃতদেহ কলিকাতায় আনীত হইলে সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বে যে শোভাযাত্রা বাহির হয়, দেশবন্ধুর শবযাত্রা ছাড়া সেরূপ বিরাট শব শোভাযাত্রা আর হয় নাই। ২৯শে সেপ্টেম্বর সুভাষচন্দ্র হাওড়া রাষ্ট্রীয় সম্মিলনে সভাপতিত্ব করেন। ১৯শে অক্টোবর তিনি লাহোরে পাঞ্জাব ছাত্র সম্মেলনে পৌরোহিত্য করেন। তিনি অভিভাষণে বলেন, “আজিকার ছাত্র আন্দোলন দায়িত্বহীন যুবক